আজ পঁচিশে বৈশাখ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে তার স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে জাতীয়ভাবে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
পঁচিশে বৈশাখ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন।
উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। এছাড়া এবারের রবীন্দ্র জয়ন্তী অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করবেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
নিরিবিলি পরিবেশ, নিভৃত বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবিগুরুর সাহিত্য চর্চায় জীবনের বেশকিছু মূল্যবান সময় কেটেছে। ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে’ এ বিখ্যাত সংগীতসহ ২ হাজার ২৩২টি গানের অধিকাংশই কুষ্টিয়ার এ শিলাইদহে বসে লিখেছেন কবি। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলি কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরষ্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়াও তিনি এখানে বসেই আমাদের জাতীয় সঙ্গীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষণ আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি। করোনার কারণে গত দুই বছর এখানে কোন আনুষ্ঠানিকতা ছিলনা। এবার কুঠিবাড়ীতে জাতীয়ভাবে তিনদিনের নানা অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে।
যে কুঠিবাড়ী রবীন্দ্রনাথকে পূর্ণতা দিয়েছে সেই কুঠিবাড়িতে আবারো আসতে পেরে খুশি রবীন্দ্রপ্রেমী ও দর্শনার্থীরা। এ ব্যাপারে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মুখলেছুর রহমান ভুইয়া জানান, বিশ্বকবির ১৬১তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে জাতীয়ভাবে অনুষ্ঠান হবে।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে। অনুষ্ঠান এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকেও পুলিশের কর্মকর্তা থাকবে।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন মহামারী করোনা প্রাদুর্ভাবে বন্ধ ছিলো সকল আয়োজন। কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় এবছরে কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত শিলাইদহে জাতীয়ভাবে বিশ্বকবির ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন করা হবে। ইতোমধ্যে তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করা হয়েছে।
প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি রবীন্দ্র সংসদসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের রবীন্দ্রনাথের লেখা গান, কবিতা ও নাটক নিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। কুঠিবাড়ির বাইরে বসেছে বিশাল জায়গা জুড়ে গ্রামীণ মেলা। মেলায় রয়েছে নাগর দোলা, চরকি, গলম জিলাপি, রবীন্দ্রনাথের ছবি সম্বলিত ক্যাপ, টি শার্টসহ হরেক রকমের পসরা।