টয়লেটের প্যানে প্রসব হওয়া নবজাতক সুস্থ, ঘটনায় তদন্ত কমিটি

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যালের প্রসুতি ওয়ার্ডের টয়লেটে নবজাতক প্রসবের ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিস্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

হাসপাতালের নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিটের (স্ক্যানু) বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম আর তালুকদার মুজিবকে প্রধান করে সোমবার (৯ মে) বিকেলে এই কমিটি গঠন করেন পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম।

কমিটি অপর দুই সদস্য হলেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং সহকারী পরিচালক ডা. এসএম মনিরুজ্জামান।

কমিটিকে পরবর্তী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক সুস্পস্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানান কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. তালুকদার এম.আর. মুজিব।

এদিকে হাসপাতালের নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিটে (স্ক্যানু) চিকিৎসাধীন ওই নবজাতক সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

স্ক্যানু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. তালুকদার এম.আর. মুজিব জানান, শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। অক্সিজেন সিচুরেশনও প্রায় ৯৭ ভাগ। তাকে পর্যবেক্ষণে রেখে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১ থেকে ২ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে সে বাড়ি ফিরতে পারবে বলে আশা করেন তিনি।

অপরদিকে টয়লেটের প্যানে ভূমিস্ট হয়ে পাইপে প্রায় ২ ঘণ্টা আটকে থাকার পর অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া নবজাতকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সোমবার জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) সুব্রত বিশ্বাস দাস হাসপাতালে গিয়ে ওই শিশুর বাবার হাতে সহায়তার অর্থ তুলে দেন। এ সময় জেলা প্রশাসনের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

শিশুটির পরিবারের হাসপাতালের আনুষাঙ্গিক খরচ মেটানোর জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনডিসি সুব্রত বিশ্বাস দাস।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বিকেল ৩টার দিকে শিল্পী বেগম (২৭) নামে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীর এক রোগী তৃতীয় তলার প্রসুতি ওয়ার্ডের টয়লেটে যান প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করতে। সেখানে টয়লেটের প্যানে আকস্মিক সন্তান প্রসব হয় তার। প্রথমে বিষয়টি বুঝতে না পাড়লেও প্যানে শিশুর কান্না শুনে শিল্পী তাকিয়ে দেখেন নবজাতক প্যানের মধ্য থেকে পাইপের মধ্যে ঢুকে গেছে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে স্বামী নেয়ামতউল্লাহসহ অন্য রোগীর স্বজনরা বিষয়টি জানতে পারেন। পরে নেয়ামতউল্লা অন্য রোগীর স্বজনদের সহায়তায় দ্বিতীয় তলায় গিয়ে ওই টয়লেটের নিচে দ্বিতীয় তলার অংশ আড়াআড়িভাবে থাকা পাইপ হাতুড়ি ও ছেনি দিয়ে ভেঙে প্রায় পৌঁনে ২ ঘণ্টা পর পাইপের ভেতর থেকে নবজাতকটি জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনাকে অলৌকিক হিসেবে দেখছেন অনেকে। টয়লেটের প্যানে নবজাতক প্রসব হওয়ার পর পাইপে আটকে থাকা এবং প্রায় পৌঁনে ২ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়েছে শের-ই বাংলা মেডিক্যালে।

Print Friendly

Related Posts