ইফতেখার শাহীন: প্রতি জোয়ারে উঠে আসা গল্দা, বাগ্দা চিংড়ির রেনুসহ বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মাছের পোনা ঠাই নেয় বরগুনার পায়রা ও বিষখালি নদীতে। এই নদীগুলোয় মশারী ও নেটের খুচ্নি জাল দিয়ে কিছু অসাধু মৎস্য শিকারী গল্দা ও বাগ্দা চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করতে গিয়ে নির্বিচারে নিধন করছে মৎস্য পোনা। এতে প্রতিদিনই ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির কোটি কোটি মাৎস্য পোনা, জুপ্লাংকটন ও জলজ প্রাণী। যা দেশের মৎস্য সম্পদের জন্য বড় হুমকি বলে বিশেষজ্ঞের ধারনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনার পায়রা ও বিষখালী নদী তীরে শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ মশারি ও খুচ্নি জাল দিয়ে প্রতিদিন অবৈধভাবে প্রকাশ্যে দিবালোকে আহরন করছেন গল্দা ও বাগ্দা চিংড়ির রেণু । এ যেনো মৎস্য রেণু নিধনের প্রতিযোগিতা। একটি খুচ্নি জালে প্রতি টানে সাত-আটটি চিংড়ির রেণুর সাথে টেংরা, পোয়া, তপসিসহ উঠে আসে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মাছের পোনা। চিংড়ির রেণু আলাদা পাত্রে জিইয়ে রাখলেও ডাঙায় ফেলে দেয়া হচ্ছে অন্যান্য প্রজাতির পোনা। দেখা গেছে গল্দা, বাগ্দা চিংড়ির রেনু সংগ্রহ করতে গিয়ে নির্বিচারে মারা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ।
তবে জেলেরা বলেন, পেটের দায়ে এবং কোন বিধি নিষেধ নেই বলে তারা এসব করছেন। এই পোনা নিধন দিনের পর দিন চলতে থাকলে, অনেক প্রজাতির মাছ এই উপকূলীয় এলাকা থেকে অচিরেই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ জন্য মৎস্য বিভাগের নেই জোড়ালো তৎপরতা বা কোন বিধি নিষেধ।
রেনু আহরনকারী মোস্তাফিজ বলেন, প্রতিদিন যে পরিমাণ রেণু ধরতে পারেন তাতে তার ১২শ থেকে ১৫শ টাকা আয় হয়। যা এই সময়ে অন্য কাজের থেকে বেশি লাভজনক। তাই রেণু আহরণ করছেন।
রেণু আড়তদার জয়নাল ফরাজি জানান, মাঝে মধ্যে মৎস্য বিভাগ বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান হয়, তখন তাদের জরিমানা বা আটক হতে হয়। তবে পেটের তাগিদে আবার শুরু করেন এ কাজ।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার জানান, জেলেদের সচেতন করতে কাজ করছেন তারা। জেলেদের সচেতন করা গেলে জেলেরাই বন্ধ করবে রেণু পোনা আহরণ। তবে বিভিন্ন সময় অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।