সুতিপাড়া ইউপি নির্বাচন: প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন

মো. রাসেল হোসেন, ধামরাই: ঢাকার ধামরাইয়ে আসছে ১৫ জুন ৫ম ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এবার সুতিপাড়া ইউপি নির্বাচনে ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ৫৯ জন মেম্বার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে উঠান বৈঠক সহ প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় করছেন। ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে ইউপির অলি-গলি, বাসা-বাড়ি, চায়ের দোকান।

নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীরা নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিন রাত এক করে চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ ইউনিয়নে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন।পিছিয়ে নেই মেম্বার প্রার্থীরা।ভোটারদের মূল আকর্ষণ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ঘিরে।

এবার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) রেজাউল করীম রাজা, সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (চশমা প্রতীক) রমিজুর রহমান চৌধুরী রুমা, রবিউল করীম রুবেল (ঘোড়া প্রতীক), এসএম তানভীর হাসান তুহিন (অটোরিকশা প্রতীক), মো. সোহেল হায়দার চৌধুরী কবির (হোন্ডা), আলীমুর রহমান লিটন (আনারস)।

সরজমিনে দেখা গেছে, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা দলবেঁধে প্রচার প্রচারণায় নির্বাচনী এলাকা সরগরম করে তুলছেন। চেয়ারম্যান মেম্বার প্রার্থীরা অটোরিকশা, ইজিবাইক, রিকশা, ভ্যানে মাইক বেঁধে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। সরকার দলীয় ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন সমানতালে। এখন পর্যন্ত কোন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা কোন প্রকার অভিযোগ করেননি কোন প্রার্থীর উপর।আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করীম রাজা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। অন্যান্য প্রার্থীরাও বলছেন জনগণের ইচ্ছাতেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। তাই জনগণ নির্বাচনে ভোট দিতে পারলে জয় আমাদের নিশ্চিত।তবে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেয়ার ব্যাপারে কোনও প্রার্থীকেই নিরাশ করছেন না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে নৌকা ও চশমার মধ্যে।

এবার এই প্রথমবারের মতো সুতিপাড়া ইউপি নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হবে ইভিএমএ ভোট দেওয়া নিয়ে উৎসাহ দেখা গেছে তরুন ভোটারদের মাঝে। সংশয় দেখা গেছে প্রবীণ ভোটারদের মাঝে।

সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রমিজুর রহমান রুমা (চশমা প্রতীক) বলেন, জনগণের ইচ্ছাতেই প্রার্থী হয়েছি। আশা করি জনগণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে আমাকে জয় করবে।আর সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হব।আমি আগেই বলেছি জনগনের চাওয়া খুবই অল্প তাদের বেশি কিছু চাওয়ার নেই। আমি চেয়ারম্যান থাকাকালে তাদের চাওয়া পূরণ করেছি। চেয়ারম্যান না থাকাকালেও পূরণ করছি।তাই আমার বিশ্বাস জনগণ ভোট দিতে পারলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হব।

আরেক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীক) রবিউল করিম রুবেল বলেন, আমি করোনা বন্যার সময় জনগণের পাশে ছিলাম। জনগণের মতেই আমি নির্বাচন করছি। আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব।

সুতিপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) রেজাউল করীম রাজা বলেন, বিগত পাঁচ বছর জনগণ আমার উপর যে দায়িত্ব ভার দিয়েছিল তা আমি সততার সাথে পালন করেছি।তাই এবারও বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে জনগণের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। আমি ব্যাপক সারা পাচ্ছি। তার কারণ, নৌকা প্রতীক উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট দিলে দেশের তথা ইউনিয়ের উন্নয়ন হয়। তাই সাধারণ জনগণ দল মত নির্বেশেষে আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিবে বলে ব্যক্ত করেন। বরাবরই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন সরকার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে। আমি আমার নেতা কর্মীদের স্পষ্ট বলে দিয়েছি আমরা কোন ঝামেলা চাই না।নির্বাচনে মতভেদ থাকতেই পারে। নির্বাচনে জয় পরাজয় আছে। নিরপেক্ষ নির্বাচনে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

রেজাউল করীম রাজা বলেন, আমি বিগত ৫ বছর সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। করোনা বন্যার সময় আমি সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি।আমার ইউনিয়নে করোনার সময় ৪৫ জন আক্রান্ত হয়েছিল, আমি তাদের নিজে বাড়িতে গিয়েছি খাবার ঔষধ ফল পৌঁছে দিয়েছি। বন্যা পরবর্তী সময় রাস্তা যেগুলো নষ্ট হয়েছিল তা তাৎক্ষনিক মেরামত করে দিয়েছি।তাই আমার বিশ্বাস গতবার যেভাবে মানুষ আমাকে নৌকা প্রতীক ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছিল এবারও মানুষ দলমতের উর্ধ্বে গিয়ে আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। আমার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে।

Print Friendly

Related Posts