আলজারি জোসেফের করা দিনের শেষ বল ছেড়ে দিয়ে মাহমুদুল হাসান জয় নিশ্চিতভাবেই স্বস্তি পেয়েছেন। অপরাজিত থেকে দিন শেষ করার আনন্দ অন্য কিছুতে নেই। ৬০ বলে ১৮ রান তুলে জয় নিজের দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করেছেন। সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্ত থিতু হয়েছেন।
১৬২ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা খারাপ ছিল না। তামিম ও জয়ের উদ্বোধনী জুটিতে চলে আসে ৩৩ রান। দশম ওভারে জোসেফ এসে তামিমকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া মিরাজ এই পেসারের পরের ওভারে স্লিপে ক্যাচ দেন। শেষ বিকেলে ২ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তোলা বাংলাদেশ খুব ভালো অবস্থানে নেই। ১১২ রানে এখনও পিছিয়ে। অ্যান্টিগা টেস্টে দ্বিতীয় দিন (শুক্রবার) শেষে এই হলো হিসেব।
তবে আশার কথা জয় ও শান্ত যেভাবে দিন শেষ করেছেন, আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করেছেন তাতে বড় কিছুর আশা করতেই পারে বাংলাদেশ। এখান থেকে ভালো করলে বাংলাদেশ ম্যাচ বাঁচাতেও পারে। খারাপ করলে ম্যাচ ডুবাতেও পারে।
শুক্রবার চা বিরতিতে যাওয়ার আগেই দ্রত সময়ের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুটি উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এতে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরে তৃতীয় সেশনে আবারও মিরাজের আঘাত। সেটা দেখেই হয়তো উইকেটের নেশা লেগেছে এবাদত হোসেনেরও। মুহুর্ত পরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের অষ্টম উইকেটের পতন ঘটালেন এই পেসার।
অ্যান্টিগায় চলমান টেস্টে প্রথম দিন থেকেই ব্যাকফুটে রয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের শুরুর দেড় সেশনেও ক্যারিবিয়ানদের দাপট বজায় থাকে। এরপরই প্রথম আঘাত হানেন খালেদ আহমেদ। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকা ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। পরের গল্পটা মিরাজের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ২২৪। ইনিংসের ১০১তম ওভার করতে আসেন মিরাজ। প্রথম বলেই কাইল মায়ার্সকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। মাত্র ৭ রান করেন মায়ার্স। স্কোরবোর্ডে আর ৬ রান যোগ হতে আবারও শিকারির ভূমিকায় এই অলরাউন্ডার। ১ রান করা জসুয়া দা সিলভাকে উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহানের হাতে কটবিহাইন্ডের শিকারে পরিণত করেন মিরাজ। এতে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে চা বিরতিতে যায় টিম বাংলাদেশ।
বিরতি থেকে ফিরে এসে যেন আরও দ্বিগুণ শক্তি ফিরে ফেলেন মিরাজ। আলজারি জোসেফকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি। তার আগেই কটবিহাইন্ডের শিকারে পরিণত করেন। টাইগার শিবিরে আআত্মবিশ্বাস বাড়ে। সেটির জের ধরেই কি না মাত্রই ক্রিজে নামা কেমার রোচকে টিকতে দিলেন না এবাদত হোসেন। লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করান।
তবু, দুশ্চিন্তা কিছুটা ছিল। অপরপ্রান্ত যে আগলে রেখেছেন ব্ল্যাকউড। অর্ধশত করে বড় স্কোরের পথে আগাচ্ছিলেন। ৬৩ রান করেন। ক্রমশ ভয়ঙ্কর হচ্ছেন। ঠিক তখনই খালেদ আহমেদের ম্যাজিক্যাল ডেলিভারি। মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটার। এর মধ্য দিয়ে তাদের নবম উইকেটের পতন ঘটলো। রইলো বাকি এক। সেটিকেও যেন আউট করার দায়িত্ব নিলেন মিরাজ। মাত্র ১ রান করা জেইডেন সিলসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। এতে ২৬৫ রানে অলআউট হয়ে গেলো স্বাগতিকরা। লিড হয়েছে ১৬২ রানের। একইসঙ্গে মিরাজের চার উইকেট পূর্ণ হলো।