সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম দিনে ২৩৪ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। কোনও উইকেট না হারিয়ে ১৬ ওভারে ৬৭ রানে দিন শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অপরাজিত আছেন দুই ওপেনার জন ক্যাম্পবেল (৩২*) ও ক্রেগ ব্র্যাথওয়েট (৩০*)। বাংলাদেশের চেয়ে ১৬৭ রানে পিছিয়ে থেকে তারা শুরু করবেন দ্বিতীয় দিনের খেলা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশও দিনের শুরুতে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছিল। কিন্তু লাঞ্চের পর ম্যাচের দৃশ্যপট পাল্টে যায়। সেন্ট লুসিয়া টেস্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সফরকারীদের অলআউট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাতে বোলিং সহায়ক উইকেট স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তবে ক্যারিবিয়ানরা ব্যাটিংয়ে নামতেই উইকেটের ভিন্ন রূপ! ক্যাম্পবেল ও ব্র্যাথওয়েট যেভাবে খেলছেন, এখন ব্যাটিং সহায়ক উইকেট না বলে উপায় নেই।
প্রথম দিনের শেষ বিকালে এবাদত হোসেন-শরিফুল ইসলাম-খালেদ আহমেদরা সাফল্য পাননি। দ্বিতীয় দিনের সকালে তারা কী করতে পারেন, সেটিই দেখার।
এর আগে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সময় ভালো যায়নি। লিটন দাস প্রতিরোধ গড়ে খেলেন দলীয় সর্বোচ্চ ৫৩ রানের ইনিংস। তামিম ইকবাল ভালো শুরু করেও ৪৬ রানের বেশি করতে পারেননি। ৮ বছর পর টেস্ট দলে ফিরে এনামুল হকের সংগ্রহ ২৩। ব্যর্থতার বৃত্ত কাটাতে ক্রিজে পড়ে থেকেও মাত্র ২৬ রান নাজমুল হোসেন শান্তর। মাহমুদুল হাসান জয় বিদায় নেন ১০ রানে। এই হলো বাংলাদেশের টপ অর্ডারের চিত্র। যার স্পষ্ট প্রভাব স্কোরবোর্ডে। ২৩৪ রানে শেষ প্রথম ইনিংস। সেটিও এসেছে আসলে শেষ দিকে শরিফুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন ছোট তবে কার্যকরী ইনিংস খেলায়।
শুক্রবার সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম দিনে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ বেশি দূর যেতে পারেনি। ক্যারিবিয়ান পেস আক্রমণের বিপক্ষে ৬৪.২ ওভারে অলআউট ২৩৪ রানে। যেখানে সর্বোচ্চ ৫৩ রান এসেছে লিটনের ব্যাট থেকে। ৭০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে এই ইনিংস খেলে আউট হন তিনি আলজারি জোসেপের বলে। চা বিরতির পর তাকে সঙ্গ দেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ ৮ রানের বেশি করতে পারেননি।
বিশেষজ্ঞ ব্যাটারদের বিদায়ের পরও বাংলাদেশের স্কোর এতদূর যাওয়ার পেছনে বড় অবদান এবাদত-শরিফুলের। শরিফুল ১৭ বলে খেলেন ঝড়ো ২৬ রানের ইনিংস। এবাদত অপরাজিত থাকেন ২১ রানে।
তবে টপ অর্ডার আরেকবার হতাশ করেছে। প্রথম সেশনে বাংলাদেশ হারায় ২ উইকেট। প্রথম টেস্টের হিসাবে অবশ্যই বাহবা পাবে। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে সেই পুরনো বাংলাদেশের ছবিই ফুটে উঠলো। প্রথম দিনের চা বিরতির আগে আরও ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা। এই সেশনে বাংলাদেশ হারায় এনামুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানকে।
বিশেষ করে, সোহানের আউট ছিল দৃষ্টিকটু। এই ব্যাটার আলজারি জোসেফকে শুধু শুধু উইকেট দিয়ে এসেছেন। জোসেফের শর্ট বল অনায়াসে ছেড়ে দিতে পারতেন সোহান। কিন্তু কী বুঝে ব্যাট ওপরে তুলে খেলার চেষ্টা করলেন। তাতেই সর্বনাশ! বল তার গ্লাভস ছুঁয়ে শূন্যে ভাসে। উইকেটকিপার জোশুয়া দা সিলভার গ্লাভসবন্দি করতে কোনও অসুবিধাই হয়নি। ফেরার আগে ৭ রান করেন সোহান। এরপর চা বিরতির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি সফরকরীরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে সফল বোলার আলজারি জোসেফ। এই পেসার ১৫ ওভারে ৫০ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। জেডেন সেলসও পেয়েছেন ৩ উইকেট, ১৪.২ ওভারে তার খরচ ৫৩। আর ২টি করে উইকেট পেয়েছেন অ্যান্ডারসন ফিলিপ ও কাইল মায়ার্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(প্রথম দিন শেষে)
বাংলাদেশ: প্রথম ইনিংসে ৬৪.২ ওভারে ২৩৪ (লিটন ৫৩, তামিম ৪৬, শান্ত ২৬, শরিফুল ২৬, এনামুল ২৩, এবাদত ২১*, জয় ১০, মিরাজ ৯, সাকিব ৮; জোসেফ ১৫-১-৫০-৩, সেলস ১৪.২-৪-৫৩-৩, ফিলিপ ৯-১-৩০-২)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: প্রথম ইনিংসে ১৬ ওভারে ৬৭/০ (ক্যাম্পবেল ৩২*, ব্র্যাথওয়েট ৩০*; এবাদত ৪-১-৮-০, শরিফুল ৬-৩-১৯-০)।