টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসিকে কে না চেনে। পছন্দের প্রিয় খেলোয়ারের নামে নিজের পালের সেরা ষাড়ের নাম ‘মেসি’ রেখেছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতীর আল আমীন। বিশাল আকৃতির ৩২ মণ ওজনের ষাড়টি দেখতে দূরদুরান্ত থেকে লোকজন তার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।
আল আমীন উপজেলার মীর হামজানি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক হাশেম আলী আকন্দের ছেলে।
আল আমীনের হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাড়টি বর্তমানে জেলায় আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। তার দাবি, টাঙ্গাইল জেলায় এটিই সবচেয়ে বড় গরু। লম্বায় ৯ ফুটের বেশি ও ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার এই ষাড়টি দাম হাঁকছেন ১০ লাখ টাকা। প্রায় তিন বছর বয়সী এই ষাড়টি অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে চান আল আমীন।
আল আমিন জানান, এলেঙ্গা শামছুল হক কলেজ থেকে ২০১৩ সালে স্নাতক (বিএসএস) পাশ করেন। পরে চাকরির চেষ্টা শুরু করেন। কিন্তু চাকরি না হওয়ায় তার বাবা তাকে পরামর্শ দেন গরুর খামার করার। ২০১৪ সালে নিজ বাড়িতে শুরু করেন গরুর খামার। আট বছর পর এখন তার খামারে ১৫টি ষাড় ও ২০টি গাভী রয়েছে। গাভীগুলোর মধ্যে সাতটি দুধ দেয়। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ লিটার দুধ বিক্রি করতে পারেন। প্রতি বছর ঈদে ষাড় বিক্রি করেন। এবার ঈদকে সামনে রেখে পাঁচটি ষাড় বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। গত বছর কোরবানির ঈদে পাঁচটি ষাড় বিক্রি করেছেন আট লাখ টাকায়। গত রোজার ঈদে দুটি ষাড় বিক্রি করেছেন আড়াই লাখ টাকায়।
তিনি জানান, অনলাইনে মেসি’র বিজ্ঞাপন দেখে অনেক ক্রেতাই আসছেন তার কাছে। বাকি পাঁচটির দাম দশ লাখ টাকা পাবেন বলে আশা করছেন। ঘাস, খড়, ভুষি এইসব দেশিয় খাবার তার খামারের গরুগুলোকে খাওয়ান। নিয়মিত চিকিৎসক দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। তিনজন নিয়মিত কর্মচারী রয়েছে ওই খামারে।
সরোয়ার হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, অনলাইনে গরুর খোঁজ পেয়ে বড় ষাড় গরুটি দেখতে এসেছেন। বেশ কয়েকটি ষাড়র রয়েছে। পছন্দ হলে ঈদে এখান থেকেই গরু নেবেন।
আল আমীন আকন্দ বলেন, মেসি আমার প্রিয় খেলোয়ার। যাকে যেমন ভালবাসি তেমনি আমার খামারের প্রতিটি গরুকেই ভালবাসি। ‘মেস’ অনলাইনে বিক্রি না হলে তাকে আরও বড় করা হবে। তবে এই ঈদে হাটে নিয়ে তাকে কষ্ট দেবো না। অনলাইনেই বিক্রি করবো ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, গরুর খামার করে অনেক ভাল আছি। চাকরি করলে এত আয় রোজগার করা যেতো না। অযথা চাকরির পেছনে না ঘুরে এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েও স্বাবলম্বি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে সরকারি পর্যায়ে সহজ শর্তে ঋন সুবিধা পেলে বেকার যুবকরা সহজেই উদ্যোগ নিতে পারবেন।
সল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জানান, আল আমীন একজন সফল খামারি। তার সফলতা দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে গরুর খামার করেছেন। বর্তমানে তার গরুটি আলোচনায় রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া বলেন, প্রতিনিয়ত খামারি ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। যেকোনও সমস্যায় তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। বড় গরুর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিটি কোরবানির পশু হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম দায়িত্ব পালন করবে বলেও জানান তিনি।
এআই/টি