৬ তলা থেকে লাফিয়ে পড়লেন গৃহবধূ

রাজবাড়ী সংবাদদাতা: রাজবাড়ী শহরের বাজারে বহুতল ভবন থেকে লাফিয়ে মারা গেছেন লাকি আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূ। তিনি সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মো. রাশিদুল হক অমির স্ত্রী।

শুক্রবার (১৫ জুলাই) রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

পরিবারের সদস্যরা লাকির মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন যে, তিনি (লাকি) বহুতল ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তারা ঐ ভবনের কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন। সেসময় তারা একটা শব্দ শুনতে পান এবং তার পরপরই ঐ ভবন থেকে হৈ চৈর শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখেন একজন মহিলা রাস্তায় পড়ে আছে।

তারা আরো জানান, দ্রুত অটোরিকশা ডেকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, গাড়িতে তোলার সময়ই তিনি একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেন এবং পুরো শরীর ছেড়ে দেন। সেসময় মনে হচ্ছিলো তার কাঁধটা ভেঙে গেছে এবং তার জামাকাপড় কিছুটা ছেড়া ছিলো বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

নিহতের মামা শ্বশুর লিয়াকত আলী চৌধুরী বলেন, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত নিচে যেয়ে দেখি লাকি পড়ে আছে। তাকে প্রথম সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়। পুরো ঘটনায় আমরা শোকস্তব্ধ। কিছু বলার ভাষা পাচ্ছি না। লাকি এরকম একটি কাজ করবে তা আমরা ভাবতেও পারি না।

নিহতের মেয়ে আফরিন জান্নাতুল হক (৮) বলেন, বাবা মায়ের ঝগড়া লাগতো ময়লা পরিষ্কার করা নিয়ে। আজ যখন আম্মু বাইরে থেকে আসে আব্বু বারবারই তাকে পা ধুতে বলছিলো। আম্মু পা ধোয়ার পরও আম্মুকে আমার পা ধুতে বলে। এসময় তাদের ঝগড়া লাগে। এরপর আব্বু বাথরুমে ঢুকলে আম্মু স্যান্ডেল আনতে যাচ্ছি বলে বাইরে বেরিয়ে আসে। এর কিছুক্ষণ পরই শুনতে পাই আম্মু ৬ তলা থেকে লাফ দিয়েছে।

দাম্পত্য জীবনে রাশিদুল হক অমি এবং লাকি আক্তারের ১টি কন্যা সন্তান ও ১ টি পুত্র সন্তান রয়েছে। পুত্র সন্তানের বয়স ২ বছর।

তবে, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রাশিদুল হক অমির সাথে কথা বলতে চাইলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আবু হোসেন বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে একজন রোগী আসেন। যিনি বহুতল ভবন থেকে পড়ে গেছেন বলে জানতে পেরেছি। আমি তার কোন বাহ্যিক আঘাত দেখি নাই এবং কোন রক্তপাতও হয় নাই। আমরা তৎক্ষণাৎ ইসিজি করি এবং ইসিজি রিপোর্ট স্বাভাবিক আসলেই তার ইন্টার্নাল ডেমারেজ হয়েছে বলে ধারণা করি। আমরা তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করি।

এ বিষয়ে পুলিশ জানান, পরিবারের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে পারিবারিক কোন কারণে এধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে আমরা মৃত্যুর কারণ জানতে পারব। তখন অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts