নবীনগরে সালিশি বৈঠকে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ জনে

নূরে আলম, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের মেরাতুলি গ্রামে সালিশকারকদের উপর হামলার ঘটনায় আহত মেরাতুলি গ্রামের সফর আলীর ছেলে আরাফাত (১৮) নামের আরও একজন মারা গেছেন। সোমবার (১৮ জুলাই) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এর আগে এ ঘটনায় রোববার (১৭ জুলাই) ভোরে বল্লমের আঘাতে মেরাতুলি গ্রামের মালেক সর্দারের ছেলে শাহ আলম (৪২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। এ নিয়ে ওই হামলায় দুজনের মৃত্যু হলো। এ ঘটনায় গোটা গ্রাম মানুষ শুন্য হয়ে গেছে। প্রতিটি বাড়ির ঘরে ঝুলছে তালা। গ্রামে টহল দিচ্ছে পুলিশ।

অপর দিকে আরাফাতের মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। কারণ, শাহ আলমের সাথে আসা লোকজনের হাতে কোন অস্ত্র ছিলো না বলে জানিয়েছেন আশপাশের লোকজন। তা হলে কার আঘাতে আহত হয়ে মারা গেছে আরাফাত? এমন প্রশ্ন জনমনে তৈরি হচ্ছে। পুলিশ বলছে বিষয়টি তদন্তের পরই পরিস্কার হয়ে যাবে।

সরেজমিনে জানা যায়, মেরাতুলি গ্রামের জাহের মিয়ার ছেলে বাহার মিয়ার পরিবারের ঝগড়ার ভিডিও ধারণ করেন সফর আলীর ছেলে রিফাত। এ নিয়ে বাহার মিয়া ও রিফাতের মধ্যে ঝগড়া হয়। বিষয়টি মিমাংশা করতে শনিবার (১৬ জুলাই) রাতে জাহের মিয়ার উঠানে সালিশ বসে। সালিশে জিয়া নামের একজন না আসায় সভায় উপস্থিত শাহ আলম এর কারণ জিজ্ঞাসা করে তাকে তাদের ঘর থেকে ডেকে আনতে গেলে সফর আলী, সাঈদুল, ছুট্টু ও আরাফাতের সঙ্গে তর্কবির্তক শুরু হয়। এনিয়ে সফর মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম উপস্থিত লোকজনের উপর মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেয়। সফর আলীর লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সালিশে আসা লোকজনের উপর অন্ধকারের মাঝে এলোপাথাড়ি হামলা চালায়। এ সময় বল্লমের আঘাত শাহ আলমের চোখে লাগে। মাথায় আঘাত লাগে হামলাকারী আরাফাতের। গুরুতর আহত অবস্থায় শাহ আলম ও আরাফাতকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মধ্যরাতে দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে রোববার ভোর রাতে শাহ আলম মারা যান৷ আরাফাতকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। সোমবার ভোরে তিনিও মারা যান। ওই হামলায় ৫থেকে ৬ জন আহত হয়েছে। আরাফাত হত্যার ঘটনায় নিহত শাহ আলমের ভাইসহ ৫জনকে আটক করেছে পুলিশ।

শাহ আলমের হত্যার ঘটনায় তার ছেলে বাদী হয়ে রবিবার রাতে নবীনগর থানায় একটি একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মালায় ২জনকে গ্রেপ্তার করে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ জানান, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।

Print Friendly

Related Posts