ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠিতে এবারও পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। ভরা মৌসুমে পেয়ারা পারা ও বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার চাষিরা। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং পদ্মাসেতু হওয়া দ্রুততম সময়ে মধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য নেওয়া যাচ্ছে পেয়ারা । ফলে ভাল দাম পেয়ে খুশী এখানকার চাষিরা।
ঝালকাঠি কৃষি বিভাগের তথ্য মতে জেলায় এবছর ৬২৯ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার মেট্রিকটন।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা, নবগ্রাম ও গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে ৯৫ ভাগ পেয়ারার চাষ হয়। এর মধ্যে কীর্ত্তিপাশার ভীমরুলী, খেজুরা, ডুমরিয়া, মীরাকাঠি, খোদ্দবড়হার, নবগ্রামের শতদশকাঠি, জগশীদপুর ও শাখাগাছি গ্রামের প্রায় শতভাগ পরিবার পেয়ারা চাষের সাথে সম্পৃক্ত। দুই শত বছরের বেশি সময় ধরে তারা পেয়ারা চাষ করে আসছেন ।
বাগান থেকে পেয়ারা পেরে এনে নৌকায় করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। পাইকাররা ট্রাক যোগে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করেন।
ভীমরুলী খালে পেয়ারার সবচেয়ে বড় ভাসমান হাট বসেছে। শ্রাবণ মাসের প্রথম থেকে ভাদ্রমাস পর্যন্ত পেয়ারার মৌসুম। এসময় প্রতিদিনই এখানে পেয়ারা বিক্রি হয়। তবে অন্য দিনের তুলনায় শুক্রবার কেনা বেচা বেশি হয়।
বর্তমানে মন প্রতি পেয়ারা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। স্থানীয়রা বলছেন, এ মৌসুমে কয়েক কোটি টাকার পেয়ারা বিক্রি হবে এখান থেকে।
পেয়ারা চাষি অমিত রায় বলেন, এবছর পেয়ারার ফলন ভালো হয়েছে। ছিটপরাসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়নি পেয়ারা। তাই দাম মোটামুটি ভালো পাওয়া যাচ্ছে। বিগত বছরের চেয়ে এবছর চাষিরা বেশি লাভবান হবেন।
পেয়ারা চাষি সুজন হালদার বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত পেয়ারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে। ক্ষেত থেকে পারে টাটকা পেয়ারা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে। তাই এবছর দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় এ অঞ্চলের চাষিদের ভাগ্য খুলেছে তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাই।
ভীমরুলী গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ভবেন হালদার বলেন, ‘পেয়ারা এই অঞ্চলের মানুষের একটি আবেগ। প্রায় দুই শত বছরেরও বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলের মানুষ পেয়ারা চাষ করে আসছেন। এখানের প্রায় শতভাগ পরিবার পেয়ারা চাষের সাথে সম্পৃক্ত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঝালকাঠি এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এখানকার পেয়ারা খেতে সুস্বাদু ও পুস্টি মানে ভরপুর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এবছর কৃষকদের বিভিন্ন রকমের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।