মোকাম্মেল হক মিলন, ভোলা: ভোলার লালমোহনের সূর্যের হাসি ক্লিনিকের সামনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের খাস জমিতে এক সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছেন জাহানারা বেগম।
প্রায় ৪৭ বছর বয়সী এই নারীর স্বামী আবু খাঁ লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পরপারে পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ১৪ বছর আগে এরপর থেকে নিরুপায় হয়ে যান তিনি। মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে যে বসতঘরটিতে রয়েছেন তাও জরাজীর্ণ। ঘরটির চারপাশে হোগলা পাতার বেড়া, আর চালার নষ্ট হওয়া টিনের ওপর দেওয়া হয়েছে পলিথিন। যেকোনো মুহুর্তে ভেঙে পড়তে পারে ঝুপড়ি ঘরটি।
আকুতি নিয়ে জাহানারা বেগম বলেন, লালমোহন উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়া হয়েছে। অথচ আমার মত হতভাগি জাহানারার ভাগ্যে জোটেনি একটি ঘর। এরমধ্যে কত মানুষকে সরকারিভাবে ঘর দেওয়া হয়েছে। আমিও একটি ঘরের জন্য ইউএনও স্যারের কাছে কয়েকবার গিয়েছি। তিনি দিবেন বলেছেন, তবে এখন পর্যন্ত আমি ঘর পাইনি। বর্তমানে আমি যে ঘরটিতে বাস করছি সে ঘরটির খুবই খারাপ অবস্থা। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে ঘরের ভেতরে। তখন সন্তানকে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটে আমার। আবার জমিটুকুও খাস।
জাহানারা আরও বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করে কোনোভাবে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। শরীরেও বাসা বেঁধেছে অনেক অসুখ। তাই এখন আর ঠিকমত কাজও করতে পারি না। সরকারের কাছে দাবী, আমাকে একটি বসত ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার। তাহলেই মরণ পর্যন্ত একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবো।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব কুমার হাজরা বলেন, সড়ক ও জনপথের ওই স্থানে যারা বাস করছে তাদের সকলকে ডাকা হয়েছে। ডেকে তাদেরকে সরকারি আশ্রয়ণের ঘর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এরমধ্যে অনেককে পৌরসভার ভেতরেও ঘর দেওয়া হয়েছে। যারা বাদ পড়েছে তাদেরকে উপজেলার অন্যান্য আশ্রয়ণগুলোতে যাওয়ার জন্য বললে তারা রাজি হয়নি। যার জন্যই হয়তো জাহানারা ঘর পাননি। তারপরেও সামনে এধরনের কোনো সুযোগ আসলে তাকে ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।