সাবমেরিন ক্যাবল লাইন ছিড়ে ভোলার দুই দ্বীপচর অন্ধকারে

ভোলার দুইটি দ্বীপ চর দুই মাস ধরে বিদ্যুৎহীন। সাবমেরিন ক্যাবলের লাইন ছিড়ে যাওয়ায় ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়ন মাঝের চর ও দৌলতখানের মদনপুর- এ দুই চরের ৭ শতাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত।

দিনের বেলা প্রচণ্ড রোদ আর রাতে গরমের দুর্ভোগ তাদের নিত্যসঙ্গী। অন্যদিকে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়িরা এবং পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে শিক্ষার্থীদের।

জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন এ দুটি দ্বীপচর আগে বিদ্যুত আলোয় আলোকিত থাকলেও এখন অন্ধকারে দিন কাটাতে হচ্ছে চরের বাসিন্দাদের। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দ্বীপচরের মানুষ। কবে নাগাদ বিদ্যুৎ আসবে তাও জানেন না কেউ।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ঢাকা থেকে টেকনিক্যাল টিম এনে এ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মদনপুর ও কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চরে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। টানা ৭ মাস বিদ্যুতের সুবিধা পাওয়ার পর গত ২৩ জুলাই সাবমেরিন ক্যাবল ছিড়ে যায়। এরপর থেকে এ দুইটি দ্বীপচর পুরো অন্ধকারে।

মদনপুর চরের বাসিন্দা লুৎফর পাটওয়ারি বলেন, আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি আমাদের চরে বিদ্যুৎ আসবে। বহু প্রতীক্ষার পর বর্তমান সরকার আমাদের বিদ্যুতের সুবিধা দিয়েছে। আমরা চরবাসি বিদ্যুৎ পেলাম। কিন্তু বেশি দিন সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারিনি। ক্যাবল ছিড়ে গেছে তাই এখন আমরা বিদ্যুৎ বঞ্চিত। কবে বিদ্যুৎ পাবো তাও জানিনা।

মদনপুর বাজারের ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন বলেন, এতোদিন বিদ্যুৎ ছিলো, আমরা ভালোভাবেই ছিলাম। অনেকেই দোকানে ফ্রিজ, টিভি, ফ্যান ও বাতি লাগিয়েছে। কেনা-বেচা ভালো ছিলো। কিন্তু এখন বিদ্যুৎ না থাকাতে আমরা লোকসানে রয়েছি।

মাঝের চরের বাসিন্দা গৃহিনী শাহনাজ বেগম বলেন, ১০ হাজার টাকা খরচ করে ঘরে বিদ্যুতের সংযোগ এনেছি। কিন্তু লাভ হয়নি। সেই আগের মত অন্ধকারেই দিন কাটাতে হয়।

শিক্ষার্থী জুবায়ের বলেন, আমরা রাতে পড়াশুনা করতে পারছি না। আমাদের পড়ালেখা করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।

মাওলানা ইসমাইল বলেন, নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবল টানা হয়েছে। যেখানে সেখানে জাহাজ নোঙর দেয়, যে কারণে তার ছিড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সিগনাল বাতি থাকলে এমনটি হতো না। আমরা দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবী জানাই।

এ ব্যাপারে ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম আলতাব হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানতে পেরেছি সাবমেরিন কেবল ছিড়ে গেছে। আমরা ঢাকায় টেকনিক্যাল টিমকে খবর দিয়েছি, তাদের দিয়ে খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে।

Print Friendly

Related Posts