রেজাউল করিম: সকালের নাস্তায় খেজুর, দুপুরের লান্স খেজুর, রাতের ডিনারও সেই খেজুরই। খেজুর ছাড়া গত এক বছরে ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজি কিংবা রুটি- কিছুই খাননি এমারত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত খেজুর ছাড়া অন্য কোনো খাবার খাবেন না বলেও জানান তিনি।
মো. এমারত হোসেন (৪০) গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. বিল্লাল হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি ক্লিনিকের অ্যাডমিন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন।
এমারত হোসেন বলেন, মরুর দেশের মানুষ খেজুর খেয়ে থাকেন। আমাদের নবীও খেজুর খেয়েছেন। এমনও সময় গেছে নবী একটি খেজুর খেয়ে দিনপার করেছেন। নবীর প্রেমের কারণেই খেজুর খাওয়া শুরু করেছি। গত এক বছরে খেজুর ছাড়া অন্য কোনো খাবার খাইনি। নিয়ত করেছি যতোদিন বেঁচে থাকবো শুধু খেজুর খেয়েই থাকবো।
স্থানীয়রা জানান, প্রথমে আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে কিন্তু পরে দেখলাম ঘটনা সত্য। খেজুর ছাড়া অন্য কিছুই এমারত খান না। এজন্য অবশ্য তার স্বাস্থ্য অনেক কমে গেছে। খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ফল। ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। এজন্য স্বাস্থ্য কমলেও সে অসুস্থ হননি। প্রতিদিন বিভিন্ন মানুষ খেজুর খাওয়ার খবর শুনে তাকে নিয়ে কৌতুহলী হন, দেখতে আসেন।
ক্ষুধায় কষ্ট হয় কিনা এমন প্রশ্নে এমারত বলেন, এটি সাধনার বিষয়। সাধনা করলে সবকিছুই করা সম্ভব। প্রথম ৩ মাস বেশ কষ্ট হয়েছে। মাথা ঘুরেছে কিন্তু এখন আর কষ্ট হয়না, বরং ভালোই লাগে। প্রথম দিকে প্রতিবেলায় ২০ থেকে ২৫ টি করে খেজুর লাগতো কিন্তু এখন ৫ টা খেলে পেট ভরে যায়। এমনকি ২টি খেজুর খেয়েও থাকতে পারি। আমি সাধারণত আজওয়া খেজুর বেশি খেয়ে থাকি।
বাইরে চলতে গিয়ে বা পরিবারে এটাতে কোন সমস্যা হয় কিনা এমন প্রশ্নে বলেন, সবাই যেহেতু জেনে ফেলেছে এটা আমার সাধনা। নবীজির প্রেম থেকে এটা করা। এজন্য সবাই অ্যাডজাস্ট কইরা নেয়। তাছাড়া চোখের সামনে যতোই মুখরোচক খাবার থাকুক আমার কোন আগ্রহ আসেনা। মানুষের সাথে চলতে গিয়ে মাঝেমধ্যে চিনি ছাড়া দু-এক কাপ চা খাওয়া হয়। মজার বিষয় হচ্ছে, এই এক বছরে আমার কোন ধরনের অসুখ হয়নি।