সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলে ২০১৮ সালে পাকিস্তানকে ১৭-০ গোলের লজ্জা দিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। চার বছর পর সেই প্রতিপক্ষকে পেয়ে আরেকবার গোল উৎসবে মেতে উঠল সাবিনা খাতুন-ঋতুপর্ণা চাকমারা। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে পাকিস্তান এবার হারল ৬-০ গোলের বড় ব্যবধানে।
নেপালের দশরথ রঙ্গশালা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে লাল-সবুজের দল। পাকিস্তানের জালে গুনে গুনে দিয়েছে ছয় ছয়টি গোল। হ্যাটট্রিক করেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, একটি করে গোল পেয়েছেন মনিকা চাকমা, মোছামৎ স্বপ্না ও ঋতুপর্ণা চাকমা।
বল দখল, আক্রমণভাগ থেকে গোলে শটে হয়ে দ্রুতগতির ফুটবলে ক্যারিশমা দেখিয়েছেন কোচ গোলাম রব্বানি ছোটনের দল। মালদ্বীপকে ৩-০ গোলে হারানোর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে গোল উৎসব করে সেমিফাইনাল অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলেছে তার দল। দিনের অন্য ম্যাচে ভারত-মালদ্বীপ লড়াইয়ে ভারতের মেয়েরা জিতলেই সেমিতে উঠে যাবে বাংলাদেশ।
কাঠমান্ডুতে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। সেই ধারবাহিকতায় ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। এরপর প্রথমার্ধেই পাকিস্তানের জালে বল জড়ায় চারবার।
খেলার ৩ মিনিটে মনিকা চাকমা গোল করার পর দ্বিতীয় গোল পেতে বাংলাদেশের অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ২৫ মিনিট। ম্যাচের ২৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মোসাম্মাৎ স্বপ্না। মারিয়ার পাস ধরে ডি বক্সের ভেতর দারুণ কারিকুরিতে স্বপ্নার বল জালে জড়ালে উদযাপনে মাতে দল।
দুই মিনিট পর আরেকবার বাধভাঙ্গা উল্লাসে মাতেন রব্বানির শিষ্যরা। এবার উপলক্ষ এনে দেন মালদ্বীপের বিপক্ষে জোড়া গোল করা সাবিনা খাতুন। ৩০ মিনিটে মারিয়ার পাস ধরে পাকিস্তানের এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে জাল খুঁজে নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
বাংলাদেশের সবসময়ের সেরা গোল স্কোরার সাবিনা পরে পেয়েছেন আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক। এই নিয়ে ৪৩ ম্যাচে বাংলাদেশি স্ট্রাইকার জাল খুঁজে নিয়েছেন ২৭ বার। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৫ ও ৫৮ মিনিটে বল জালে জড়িয়ে আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্কোরার বনেছেন তিনি, ২ ম্যাচে পেয়েছেন ৫ গোল।
৩৫ মিনিটে মাঝমাঠে থেকে লম্বা পাস ধরে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে কাঁপন ধরান বাংলাদেশের অধিনায়ক। পরে কারিকুরিতে পাকিস্তান ডিফেন্ডারদের পরাস্ত করে দারুণ এক প্লেসমেন্ট শটে বল জালে জড়ান তিনি। প্রথম ম্যাচের হ্যাটট্রিকের আক্ষেপ ৫৮ মিনিটে ঘুচিয়ে দেন সাবিনা।
মারিয়া মান্ডার ক্রস থেকে দারুণ এক হেডে গোল করে টুর্নামেন্টের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন লাল-সবুজের অধিনায়ক। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেন ঋতুপর্ণা চাকমা। তার দৃষ্টিনন্দন শটে বাংলাদেশের স্কোরলাইন দাড়ায় ৬-০। ত্রিশ গজের বাইরে থেকে জোরালো শটে পাকিস্তানের গোলরক্ষককে বোকা বানান ঋতুপর্ণা। পরে আরও কিছু আক্রমণ হলেও ৬ গোলের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ দল।