‘ভূমি আন্দোলনের সাথে খাদ্য সার্বভৌমত্ব এর সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের হলে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের আয়োজনে ১০ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বেলা ১১ টায় ‘ভূমি আন্দোলনের সাথে খাদ্য সার্বভৌমত্ব সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের জেলা আহবায়ক শুক্কুর আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুজ্জামান, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. মাহবুবুর রহমান মধু, বিষয়ভিত্তিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান।

আরো বক্তব্য রাখেন সম্মানিত অতিথি বরিশাল সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার তানজিলা আহমেদ, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমিন, বাংলাদেশ সংযুক্ত বিল্ডিং এন্ড উড ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল আলম ফারুক, বরিশাল ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আলম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লা, বাংলাদেশ কিষাণী সভা কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নেহার পারভীন রুনু, বরিশাল জেলা শাখার সভানেত্রী রুনা লায়লা, সেলিনা বেগম, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের বরিশাল জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক সঞ্জীব সিংহ বর্মন কৃষক ইনসান হাওলাদার, সেলিম রেজা, জামাল হোসেন, এনায়েত হোসেন খান প্রমূখ।

প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়- খাদ্য সার্বভৌমত্ব ধারণাটি একটি আন্তর্জাতিক প্রচার অভিযান।১৯৯৬ সালে ইতালির রোমে বিশ্বখাদ্য সম্মেলনের শুরু। নয়া উদারনৈতিক বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে দুনিয়ার কৃষক সংগঠন আন্তর্জাতিক লা ভিয়া ক্যাম্পেসিনা কর্তৃক প্রথম দুনিয়ার কৃষকদের স্বার্থ,অস্তিত্ব ও জীবন-জীবিকা রক্ষার জন্য খাদ্য নিরাপত্তার ধারণার বিকল্প হিসেবে উত্থাপন করা হয়। খাদ্য সার্বভৌমত্ব আন্দোলন একটি বিশ্ব আন্দোলন। স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার এ ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সরকারকে উল্লেখিত ঘোষণার সাথে সঙ্গতি রেখে নীতিমালা প্রনয়ন করতে হবে, যা কৃষকদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করবে।

ইতিমধ্যে আফ্রিকা মহাদেশের মালিতে কৃষি নীতিমালা খাদ্য সার্বভৌমত্বের নীতিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।নেপালে খাদ্য ও নিউট্রেশন সার্বভৌমত্বের ধারণাকে দেশের জাতীয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে এবং আইন হিসাবে পাশ করার পরিকল্পনা করছে।

খাদ্য সার্বভৌমত্ব বলতে আমরা যা বুঝি তা হচ্ছেঃ

১) ভূমির উপর কৃষকের পূর্ণ অধিকার থাকতে হবে।(২) কি ধরনের ফসল উৎপাদন করবে তার পছন্দের অধিকার কৃষকের থাকতে হবে। (৩)সাংস্কৃতিকভাবে গ্রহনযোগ্য খাদ্য উৎপাদনের অধিকার থাকতে হবে।

১৯৯৭ সালে ভূমি নীতিমালা মোতাবেক প্রতি ভূমিহীন পরিবারকে ১.৫ একর করে খাস জমি দেয়া হয়। এ অল্প পরিমাণ জমি একদিকে যেমন একটি ভূমিহীন পরিবারকে জীবীকার নিশ্চয়তা দেয় অন্যদিকে তেমনি তাকে মর্যাদার জীবন দান করে। খাদ্যসার্বভৌমত্বের মূল লক্ষ্য যেহেতু জমির মাধ্যমে কৃষকের ক্ষমতায়ন সেহেতু জমির আন্দোলনের সাথে এর নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ককে আরও অগ্রসর করার জন্য একটি সমন্বিত ভূমি সংস্কার তথা কৃষি সংস্কার করতে হবে।

সূত্র: সঞ্জীব সিংহ বর্মন, যুগ্ম আহবায়ক, বরিশাল জেলা শাখা

Print Friendly

Related Posts