গলাচিপায় ১০ পরীক্ষার্থী ও কলাপাড়ায় ৫ শিক্ষক বহিস্কার, বোর্ড বলছে বহিস্কার নেই!
খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল : অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে গলাচিপায় ১০ জন পরিক্ষার্থী এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কলাপাড়ায় ৫ জন শিক্ষককে বহিস্কার করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা শেষে বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে প্রথম দিনে কোন শিক্ষার্থী বা শিক্ষক বহিস্কারের ঘটনা ঘটেনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গলাচিপার খারিজ্জমা ইছাহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৯ জন ও গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। জানা গেছে, বহিষ্কৃতদের মধ্যে কল্যাণ কলস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন, লামনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন, মধ্য ধরান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন, গুয়াবাড়িয়া এবি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন, কল্যাণ কলস বেগম রোকেয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন, মধ্য হরিদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন, খারিজ্জমা ইছাহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন, ভুরিয়া বিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন ও পাতাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খারিজ্জমা ইছাহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সচিব নুসরাত জাহান জানান, আশেপাশে তাকানোর অপরাধে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
এদিকে কলাপাড়ায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বে অবহলোর অভিযোগে ৫ জন শিক্ষককে বহিস্কার করেছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী উপজেলার তিনটি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে এই ৫ জন শিক্ষককে বহিস্কার করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোকলেছুর রহমান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বহিস্কৃত শিক্ষকরা হলেন মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহ আলম, হাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজালাল, কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত মুসুল্লীয়াবাদ একে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান এবং মেয়াজ্জেমপুর ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত নূরপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী আ. রহমান ও তারিকাটা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী মো. জামাল হোসেন।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে যথাযথ দায়িত্ব পালনে গাফেলতির কারনে এসব শিক্ষকদের বহিস্কার করা হয়।
তবে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে প্রথম দিনে বোর্ডে কোন বহিস্কারের ঘটনা ঘটেনি। এমনকি বোর্ডের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বহিস্কারের কোন তথ্য দেওয়া হয়নি। রাতে বিষয়টি বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন কে জানানো হলে তিনি বলেন এটা তো হতেই পারে না। কারণ কোন স্কুল বা কেন্দ্র থেকে আমাদের কাছে এ ধরনের কোন ম্যাসেজ দেয়নি। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা শেষ হবার সাথে সাথে রিপোর্ট আকারে বোর্ডকে জানাতে হবে। বিষয়টি আমি এখনই দেখছি। পরে পুনরায় খোঁজ খবর নিয়ে তিনি বলেন এ ঘটনায় আমরা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে। আমরা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করব।
এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্রে বরিশালে অনুপস্থিত ছিলেন ৯৯২ জন পরীক্ষার্থী। বৃহষ্পতিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ কুমার গাইন।
তিনি জানান, বিভাগের ৬ জেলায় ১৮৭ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে আজ মোট ৮৭ হাজার ৮৮ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার কথা ছিলো। তবে এরমধ্যে অংশগ্রহন করেছে ৮৬ হাজার ৯৬ জন পরীক্ষার্থী, ফলে অনুপস্থিতির সংখ্যা ৯৯২ জন। আর শতকরা হিসেবে এর হার ১ দশমিক ১৪। বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, অনুপস্থিতির মধ্যে সর্বোচ্চ বরিশাল জেলায় ৩০৫ জন রয়েছে, এরপর ভোলায় ২১৪জন, পটুয়াখালীতে ১৭৩ জন, বরগুনায় ১১৬জন, পিরোজপুরে ১১৩ ও ঝালকাঠিতে রয়েছে ৭১ জন জন।