ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাসে তুলে এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

জ.ই বুলবুল: গভীর রাতে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক নারীকে (৪১) বাসে উঠিয়ে নেন চালক ও সহকারী। এরপর বাসটিকে নির্জন স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন তারা। এ দৃশ্য দেখে ফেলেন পাশের একটি করাতকলের মালিকের ছেলে। এরপর তিনি ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে করাতকলের কার্যালয়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন।

গত শুক্রবার গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিয়াল্লিশ্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৩ টার দিকে ধর্ষণের শিকার নারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় গিয়ে পুলিশকে ঘটনাটি জানান। এরপর ওই রাতে ও শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর শনিবার রাতে ওই নারী সদর থানায় মামলা করেন।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস নামের বাসের চালক নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ঘাশিরদিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম (২৬) ও বিয়াল্লিশ্বর এলাকার তামিম টিম্বার মিলের মালিকের ছেলে কেফায়েত উল্লাহ ওরফে তামিম (২১)। এ ঘটনায় বাসের চালকের সহকারী শিবপুর উপজেলার আশরাফুল ইসলাম (৩০) পলাতক।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ওই নারীর বাড়ি কিশোরগঞ্জের একটি উপজেলায়। চাকরির সূত্রে তিনি স্বামী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার কমলাপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসে চড়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেন। তিনি আখাউড়ায় একটি মাজার জিয়ারত করতে যাচ্ছিলেন। বাসটি যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলী পৌঁছায়, তখন অনেক রাত হয়ে যায়। এর মধ্যে বাসে চালকের সহকারী আশরাফুল ওই নারীর সঙ্গে বিভিন্নভাবে কথা বলার চেষ্টা করেন। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে কাউতলী এলাকায় নেমে আখাউড়ার কোনো যানবাহন পাচ্ছিলেন না ওই নারী। কিছুক্ষণ পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস পরিবহনের আরেকটি বাস নিয়ে কাউতলী মোড়ে আসেন চালকের সহকারী আশরাফুল। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চালক নজরুল। তারা ওই নারীকে বাসে তুলে সদর উপজেলার বিয়াল্লিশ্বর এলাকার একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে দুজনে তাকে ধর্ষণ করেন। এ দৃশ্য পাশের কেফায়েত উল্লাহ দেখে ফেলেন। এরপর তাদের ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে করাতকলে নিয়ে ধর্ষণ করে কেফায়েত। পরে তারা ওই নারীকে বাসে করে শহরের কাউতলী এলাকায় নামিয়ে দিয়ে ট্রেনে ঢাকা চলে যেতে বলেন। কিন্তু রাত ৩ টার দিকে ওই নারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় গিয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার দুজন রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts