ফাইনাল ম্যাচ । কখনো গুজরাট, কখনো চেন্নাইয়ের দিকে ম্যাচের সম্ভাবনা ঝুঁকছে । শেষ দুই বলে ধোনিদের লক্ষ্য গিয়ে দাঁড়ায় ১০ রান। প্রায় অসম্ভব সেই কাজটাই করে দেখালেন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা। বাঁহাতি অলরাউন্ডারের শেষ বলের চারে আইপিএলের পঞ্চম শিরোপা জিতলেন মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস।
সোমবার (২৯ মে) আহমেদাবাদে টানটান রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে গুজরাট টাইটান্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় চেন্নাই। এ জয়ে আইপিএলের সর্বোচ্চ শিরোপাজয়ীর তালিকায় মুম্বাইয়ের পাশে জায়গা করে নেয় চেন্নাই সুপার কিংস।
এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আইপিএল ফাইনালে সর্বোচ্চ ২১৪ রানের পুঁজি পায় গেলোবোরের চ্যাম্পিয়ন গুজরাট। বৃষ্টিতে চেন্নাইয়ের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫ ওভারে ১৭১। শেষ বলে চার মেরে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে তারা। বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে চেন্নাইকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রুতুরাজ গায়কোয়াড়। পাওয়ার প্লের ৪ ওভারে রান আসে ৫২। পাওয়ার প্লে শেষেও কমেনি রানের গতি। ৬ ওভারে চেন্নাইয়ের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৭২।
সপ্তম ওভারে গুজরাটকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন নূর আহমেদ, রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে ফিরিয়ে। বাঁহাতি এ স্পিনার একই ওভারে ফিরিয়েছেন ডেভন কনওয়েকেও। ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৭ রান করে মোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কিউই এ ব্যাটার।
একই ওভারে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রানের চাকা সচল রেখেছেন আজিঙ্কা রাহানে। ১৩ বলে ২৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর তিনিও ফেরেন মোহিত শর্মার বলে।
পঞ্চম শিরোপা জিততে শেষ ২০ বলে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ৫০ রান। পাঁচ বল পরেই লক্ষ্যটা গিয়ে দাঁড়ায় ১৫ বলে ২৩ রান। এক কথায়, ম্যাচটা প্রায় হাতের মুঠোয় ছিল চেন্নাইয়ের। সেখান থেকে হুট করেই ম্যাচটা ঘুরে যায় মোহিত শর্মার পরপর দুই বলে দুই উইকেটে। নিজের শেষ আইপিএল ইনিংসে ১৯ রান করে ফেরেন আম্বাতি রাইডু। সম্ভাব্য শেষ ফাইনালে গোল্ডেন ডাকে ফিরেছেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি।
শেষ ওভারে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। তবে মোহিতের প্রথম চার বল থেকে আসে মাত্র ৪ রান। কিন্তু শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার মেরে জয়টা গুজরাটের হাতের মুঠো থেকে ছিনিয়ে নেন জাদেজা।
এর আগে, টস জিতে প্রথমে গুজরাটকে ব্যাটিংয়ে পাঠান চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খেতে পারতো গুজরাট। তুষার দেশপান্ডের বলে স্কয়ার লেগে শুভমান গিলের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন দীপক চাহার। গিল তখন ২ রানে।
গিল জীবন পাওয়ার পর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন। পাওয়ার প্লেতে তিনি আর ঋদ্ধিমান সাহা মিলে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন গুজরাটকে। ৬ ওভারে তারা তোলে ৬২ রান।
জীবন পাওয়া গিল হাফসেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে রবীন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণিতে ধোনির স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। ২০ বলে ৭ বাউন্ডারিতে গুজরাট ওপেনার করেন ৩৯।
দ্বিতীয় উইকেটে সাই সুদর্শনকে নিয়ে ৪২ বলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন ঋদ্ধিমান। ৩৬ বলে ফিফটি পূরণ করা উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার ফেরেন দীপক চাহারের শিকার হয়ে। ৩৯ বলে তার ৫৪ রানের ইনিংসে ছিল ৫ চার আর ১ ছক্কার মার।
এরপর ৩৩ বলে ফিফটি করেন সুদর্শন। ১৭তম ওভারে তুষার দেশপান্ডেকে ৩ চার আর ১ ছক্কা হাঁকিয়ে একাই ২১ রান তুলে নেন এ ব্যাটার।
সুযোগ ছিল সেঞ্চুরির। শেষ ওভারে পাথিরানাকে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারের একদম কাছে চলে এসেছিলেন সুদর্শন। কিন্তু পরের বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে যান। ভাঙে প্রথম সেঞ্চুরির স্বপ্ন। চেন্নাইয়ের সব বোলারই খরুচে ছিলেন। পেসার মাথিশা পাথিরানা ২ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে দেন ৪৪ রান।