নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জিতল বাংলাদেশ। আগের আঠারো বারের দেখায় কোনোটিতেই জয় পায়নি বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডে হেরে আগেই সিরিজ খুইয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচ রূপ নিয়েছিল আনুষ্ঠানিকতায়। নিউ জিল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল ধবল ধোলাই, বাংলাদেশের সান্ত্বনার জয়। নিজেদের লক্ষ্য ভালোভাবেই পূরণ করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে নিউ জিল্যান্ডকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ শেষ করলো লাল সবুজের দল।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) নেপিয়ারে টস জিতে নিউ জিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশী পেসারদের তোপের মুখে শতরানের ঘরও পার হতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। ৩১.৪ ওভারে ৯৮ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। জবাব দিতে নেমে এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারিয়ে ২০৯ বল হাতে রেখেই নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডেতে প্রথম জয় তুলে নেয় শান্তর দল।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশী পেসারদের তোপের মুখে পড়ে নিউ জিল্যান্ড। রাচীন রবীন্দ্রকে ৮ রানেই বিদায় করে প্রথম আঘাতটা হানেন তানজীম হাসান সাকিব।উইকেটে এসেই বিদায় নেন হেনরি নিকোলস। ওপেনার উইল ইয়াঙ্গকে নিয়ে একটা জুটি গড়ার চেষ্টা করেন টম লাথাম। কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। লাথামকে ২১ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন শরিফুল।
লাথামের বিদায়ে ভরসা হয়ে ছিলেন ওপেনার ইয়াং। তাকেও ২৬ রানের মাথায় মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান শরিফুল। ইয়াংকে আউট করার মধ্য দিয়ে ১৪তম বাংলাদেশী বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার।
ইয়াং আউট হতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে নিউ জিল্যান্ডের ইনিংস। শরিফুলের সঙ্গে হাত মেলান বাকি তিন পেসার তানজীম, মোস্তাফিজুর রহমান ও সৌম্য সরকার। তাতেই দিশেহারা হয়ে ৯৮ রানে গুটিয়ে যায় কিউইরা। ইয়াং আউট হওয়ার পরের ৬ ব্যাটারের মধ্যে দুই অঙ্কের ঘর পেরোতে পেরেছেন কেবল জশ ক্লার্কসন ও আদিত্য অশোক। বাকিদের রান আটকে যায় মোবাইল ফোনের ডিজিটের ঘরে।
কিউইদের একশর আগে গুটিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব বাংলাদেশের পেস চর্তুষ্টয়ের। সমান তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল, সাকিব ও সৌম্য। মোস্তাফিজ পেয়েছেন ১ উইকেট। রান খরচের দিকে দিয়ে সবচেয়ে কৃপণ ছিলেন তানজীম। ওভারপ্রতি ২ রান করে দিয়েছেন এই তরুণ পেসার।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করেন দুই বাংলাদেশী ওপেনার সৌম্য সরকার ও এনামুল হক বিজয়। তবে ব্যক্তিগত ৪ রানের মাথায় চোখে কিছু একটা সমস্যা হচ্ছিল সৌম্য সরকারের, ঠিকঠাক দেখতে পাচ্ছিলেন না বলে ইঙ্গিত করছিলেন। এর আগে পানি দিয়েছেন। এরপর ফিজিওকে ডেকে পাঠান। ড্রপও দেওয়া হয়। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি। ১৬ বলে ৪ রান করেই উঠে গেলেন সৌম্য।
এনামুলের সঙ্গে এসে জুটি বাঁধলেন অধিনায়ক শান্ত। দুজন মিলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫০ বলে যোগ করলেন ৬৯ রান। দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে এনে ৩৭ রানের মাথায় বিদায় নেন এনামুল। তবে লিটনকে নিয়ে বাকি কাজটা সেরে ফিফটি করেই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক শান্ত। লিটন ১ ও শান্ত ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন।