মেট্রোনিউজ:
সন্তানের জন্য দোয়া কামনা ।। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) স্থায়ী সদস্য, সাপ্তাহিক সময় এর সম্পাদক ও প্রকাশক জেহাদ হোসেন চৌধুরীর সন্তান মোঃ আলিমুন হোসেন চৌধুরী গত ২৭ অক্টোবর ২০১৫ (মঙ্গলবার) থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বারডেম-২ হাসপাতালের Special Care Baby Unit (SCBU) এ ভেন্টিলেশানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার বয়স ১৩ দিন। জেহাদ হোসেন চৌধুরী তার সন্তানের রোগমুক্তি কামনায় সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।
ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন মোঃ আলিমুন হোসেন চৌধুরীর শারীরিক সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। জেহাদ হোসেন চৌধুরীর মোবাইল নম্বর- ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২ ।। এই ছিল ডিআরইউর একটা প্রেস রিলিজ। এতে শুধু এটাই বোঝা গেছে একজন সাংবাদিকের সন্তান বিপদাপন্ন।
কিন্তু এর বাইরে পুত্রের জন্য সাংবাদিক পিতাকে যে কতটা যাতনা সইতে হচ্ছে, নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে কতটা ছটফট করতে হচ্ছে, তা রয়ে যাচ্ছে আমাদের অগোচরেই। তা তো আর প্রেস রিলিজে আসবার বিষয়ও নয়। তবু এখন ফেসবুকের কল্যাণে কিছুটা হলেও টের পাওয়া যায়। ব্যাথাতুর এখানে নিজেকে শেয়ার করে কিছুটা কষ্ট লাঘবের প্রয়াষ খুঁজে পান। জেহাদ চৌধুরীও তার দুঃখভার ফেসবুকে তেমনিভাবে লাঘবের চেষ্টা চালিয়েছেন। ফেসবুকের কয়েকদিনের স্ট্যাটাস দেখলেই যা অনায়াসে টের পাওয়া যায়।
বিডিমেট্রোনিউজের পাতায় কষ্টভরা স্ট্যাটাসগুলো এখানে তুলে দেওয়া হলো:
সর্বশেষ স্ট্যাটাস.
আমার বাবা মো. আলিমুন আরাফাত ওয়াসি’র জন্য আবারও আপনাদের কাছে দোয়া ভিক্ষা চাইছি। ওকে সবাই দোয়া করবেন, আল্লাহ যাতে ওকে দ্রুত ওর মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন। টানা ১৪ দিন সেগুনবাগিচাস্থ্ বারডেম-২ হাসপাতালে (SCABU- Ventilation) চিকিৎসাধীন রয়েছে। শ্বাসকষ্টে ভুগছে আমার কলিজার টুকরা।
তার আগের স্ট্যাটাস.
প্রতি রাতেই সকালের অপেক্ষায় থাকি। ১১ টায় রাউন্ড শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক কাউন্সিলিংয়ে আমাকে বলবেন- “আপনার ছেলে সুস্থ্য হয়ে গেছে, আমরা ওকে আজই রিলিজ দিব।” কিন্তু না। একই কথা শুনতে শুনতে হাপিয়ে উঠেছি। মলিন দৃষ্টিতে ডাক্তারের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া টু-শব্দটি করারও শক্তি থাকে না আমার। কারণ ১২ টার মধ্যেই সহধর্মীনি ফোনে জানতে চাইবে- তার বুকের ধন কেমন আছে? মেয়েরা জানতে চাইবে-তাদের ভাইয়া কেমন আছে, কখন বাসায় নিয়ে যাবো? সহকর্মী-বন্ধুরা জানতে চাইবে- কোন আপডেট-ইম্প্রুভমেন্ট হয়েছে কি না। জবাব একটাই-না, না, না। আর কতো ‘না’ শেষে হ্যাঁ হবে? আর কতদিন আমার নিস্পাপ শিশুটি আকাশমুখি হয়ে থাকলে ওপরওয়ালা তাকে ক্ষমা করবেন? আর কতদিন গর্ভধারিণী মাকে অপেক্ষা করতে হবে- সন্তানের মুখে দুধ তুলে দেবার জন্য? আর কতো……………………………………?
তার আগের স্ট্যাটাস.
ঘরে ঢুুকতেই দুই মেয়ের প্রশ্ন-“বাবা ভাইয়া কোথায়? সহকর্মীদের প্রশ্ন- ছেলের খবর কি? বউ জানতে চায়- তার বুকের ধন কেমন আছে?”- এমন শত প্রশ্নের সঠিক জবাব না দিতে পারা যে কত কষ্টের তা কেবল আমিই জানি। আজ ১০ দিন গত হতে চলল। আমার বাবা সেই আগের ঠিকাণায়, আগের মতোই আছে। প্রতিদিনই আশায় থাকি, এই বুঝি আমার বাবা সুস্থ্য হয়ে উঠেছে। এই বুঝি ডাক্তার বলবেন- আমনার পেসেন্ট সুস্থ্য হয়ে গেছে। কিন্তু না, একই কথা, একই শান্তনা- কবে, কতদিন, কিছুই জানি না। চারিদিকে আমার এতো শুভাকাঙ্খি- এতা মানুষ দোয়া করছে- আল্লাহ নিশ্চই কারো না কারো ডাক কবুল করবেন, আমার বাবা সুস্থ্য হয়ে উঠবে। এই আশায় প্রহর গুণছি। আমার বাবুটার জন্য আবারও আপনাদের কাছে দোয়া চাইছি। ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন, প্লিজ।