মাছ ধরতে গিয়ে সম্ররা মুন্ডা নামের এক জেলের পায়ুপথ দিয়ে ২৫ ইঞ্চি কুঁচিয়া মাছ (জেল ফিস) ঢুকে পড়ার অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে। পরে পেট অপারপশন করে জ্যান্ত কুঁচিয়া মাছ বের করে আনা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে এ যাবৎকালের স্মরণীয় ঘটনা বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (২৩ মার্চ) মৌলভীবাজারে হাওরে দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সম্ররা মুন্ডা (৫৫) কমলগঞ্জ উপজেলার মিতিঙ্গগা চা বাগানের ধনমুন্ডার ছেলে।
জানা গেছে, সম্ররা মুন্ডা একজন রেজিস্ট্রার কার্ডধারী জেলে। তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছ ধরে স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করেন। ২৩ মার্চ স্থানীয় হাওরে মাছ ধরতে যান। হটাৎ কোমর সমান কাদায় আটকে যান তিনি। তখন তার দুই হাতে থাকা দুটি কুঁচিয়া মাছের একটি পানিতে পড়ে যায় এবং আরেকটি কাদায় পড়ে। এ সময় তিনি অনুভব করেন তার পায়ু পথে কি যেন ডুকছে। তবে সেটিকে গুরুত্ব দেননি তিনি। সম্ররা মুন্ডা সেখান থেকে বাড়িতে যান এবং খাওয়া দাওয়া করেন। এরপর তার পেটে প্রচুর ব্যথা অনুভব হয়। ২৪ মার্চ রোববার স্থানীয় হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ওসমানীর চিকিৎসকরা সব শুনে এক্সের মাধ্যমে পেটের ভেতর লম্বা আকৃতির একটি বস্তু দেখতে পান। তখন কর্তব্যরত ডাক্তাররা সম্ররা মুন্ডাকে সন্ধায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। সেখানে প্রফেসর ডা. জানে আলমের নেতৃত্বে ৪ জন চিকিৎসক ২ ঘণ্টা অপারেশন চালিয়ে পেটের ভেতর থেকে একটি জ্যান্ত কুঁচিয়া মাছ বের করে আনেন। এ ঘটনায় ডাক্তারসহ সবাই বিস্মিত। পরে পেটের ভেতর কুচিয়া মাছ জনসাধারণের মধ্যে জানাজানি হলে সিলেটজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এ অস্ত্রোপচারে আরও অংশগ্রহণ করেন সার্জারি ইউনিট-২ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. রাশেদুল ইসলাম ও ডা. তৌফিক আজিজ শাকুর।
ওসমানী মেডিকেলের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে জ্যান্ত ২৫ ইঞ্চি কুঁচিয়া মাছ (জেল ফিস) উদ্ধার করা হয়। এটা একটা অপ্রত্যাশিত ও কঠিন অপারেশন ছিল যা আমাদের টিম ভালোভাবে সম্পন্ন করেছে। রোগী পুরোপুরি সুস্থ আছেন। বর্তমানে সম্ররা মুন্ডা ওসমানী মেডিকেলের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।
চিকিৎসকরা জানান, কুঁচিয়াটি সম্ররা মুন্ডার পেটের মধ্যে কিছু নাড়ি কেটে ফেলেছে। তাই পায়খানার রাস্তা বন্ধ রেখে আপাতত নল দেওয়া হয়েছে। দেড় মাস পর আরও একটি অস্ত্রোপচার করতে হবে।
ইত্তেফাক