রাজধানী হাতিরঝিল লেকে ভাসমান অবস্থায় সারাহ রাহানুমা (৩২) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত রাহানুমা বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল জি-টিভির বার্তাকক্ষ সম্পাদক ছিলেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে রাহনুমাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মো. সাগর নামে এক পথচারী বলেন, লেকে ভাসতে দেখি ওই নারীকে। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাহানুমার বাড়ি কল্যাণপুরে। তার বাবার নাম বখতিয়ার শিকদার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সারাহ রাহনুমা মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন- ‘জীবন্মৃত হয়ে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই ভালো।’ একই সময় ফাহিম ফয়সাল নামে এক যুবককে ট্যাগ করে তিনি আরও একটি পোস্ট দেন- ‘তোমার মতো বন্ধু পেয়ে ভালো লাগল। আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন। আশা করি, শিগগিরই তোমার সব স্বপ্ন পূরণ হবে। আমাদের অনেক পরিকল্পনা ছিল। দুঃখিত, পরিকল্পনাগুলো পূরণ করতে পারছি না। তোমার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর রহমত করুক।’
ওই পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কপালে পতাকা বাঁধা কয়েকটি ছবিও পোস্ট করেছেন সারাহ।
এদিকে সারাহর স্বামী সায়েদ শুভ্র গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘সম্পর্কের মাধ্যমে সাত বছর পূর্বে আমরা পরিবারকে না জানিয়ে বিবাহ করেছিলাম। গতকাল সারাহ অফিসে গিয়ে রাতে আর বাসায় না ফিরে এক ব্যক্তিকে দিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসা ভাড়ার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘পরে আমি তাকে ফোন করে বলি রাতে তো তুমি বাসায় আসতে তাহলে অন্যকে দিয়ে কেন টাকা পাঠিয়ে দিয়েছো? তখন সে বলল আমি ব্যস্ত আছি বলে ফোন রেখে দেয়। পরে রাত ৩টার দিকে খবর পাই সে হাতিরঝিল লেকের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে। পরে ঢামেক এসে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।’
শুভ্র বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো ঝগড়াও হয়নি তবে বেশ কিছুদিন আগ থেকে আমার স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে চাচ্ছে। আমরা দুজনই কাজী অফিসে গিয়ে ডিভোর্স দিয়ে আসব। দেশের এই পরিস্থিতিতে আর কাজী অফিসে যাওয়া হয়নি।’