মেট্রো নিউজ, ঢাকা: পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার কথা আদালতে অস্বীকার করেছেন নিহতদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমান। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) মামলাটির প্রধান আসামি ঐশীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেন আদালত। ঐশী আত্মপক্ষ সমর্থন করে তার বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে দাখিল করেন।
ঐশীসহ তিনজন এ মামলার আসামি। ঐশী ও তার বন্ধু আসাদুজ্জামান জনিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা অপর আসামি মিজানুর রহমান রনি আদালতে হাজির ছিলেন।
ঐশীর আইনজীবী মাহবুবুর রহমান রানা বলেন, ঐশী লিখিত বক্তব্যে তার বাবা-মাকে হত্যার কথা অস্বীকার করেন।
তিনি আরও বলেন, ঐশীর দাবি, ঘটনার সময় তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। এর সমর্থনে একটি সনদপত্র আদালতে দাখিল করেন। পুলিশ নির্যাতন করে তার স্বীকারোক্তি আদায় করে। তার বাবা-মা যখন খুন হন তখন তিনি বাসায় ছিলেন না। বন্ধুর বাসায় হুইস্কি খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। তার বাবা-মাকে কে বা কারা খুন করেন তাও তিনি জানেন না।
ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ ঐশীর আত্মপক্ষ সমর্থনের পর আগামী ২০ অক্টোবর যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন।
ওই বছরের ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন ঐশী। পরে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছিল দাবি করে ৫ সেপ্টেম্বর স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। আদালত তা নথিভূক্ত রাখার নির্দেশ দেন।
গত বছরের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঐশীসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন।গত বছরের ৬ মে ঐশীসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।
অপর আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার চলছে শিশু আদালতে। গত বছরের ২০ মে সুমির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে সুমিকে জামিন দেন শিশু আদালতের বিচারক জাকিয়া পারভিন। গত বছরের ১ জুন গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্র থেকে মা সালমা বেগমের জিম্মায় জামিনে মুক্তি পেয়েছে সে।
ঐশীদের মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হলে গত বছরের ৩০ নভেম্বর নতুন করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।