অসহনীয় মাথাব্যথা ?

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক হঠাৎ করেই যে ধরনের অসুখ সুখ কেড়ে নিতে পারে, তার মধ্যে অন্যতম মাথাব্যথা। এ রোগ খুব সহজেই মানুষের কর্মচাঞ্চল্য কিংবা উচ্ছলতা বিনষ্ট করে মুহূর্তের মধ্যে স্থবির করে ফেলতে পারে। এ রোগের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মাইগ্রেন। মাথাব্যথা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ আছে। অন্যতম কারণ- মাথাব্যথার পেছনে ব্রেইন টিউমার থেকে শুরু করে চোখের সমস্যা, সাইনাসের ইনফেকশন, উচ্চ রক্তচাপ, এমনকি সাধারণ টেনশনও দায়ী হতে পারে। তবে সমস্যাটি যদি মাইগ্রেন বলে শনাক্ত করা যায়, তখন এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তবে মাইগ্রেন চিরতরে নির্মূল করা যায় না। চিকিৎসায় প্রকোপ কমিয়ে আনা যায়। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়Ñ এটাই আশার কথা।

মাইগ্রেন : এটি বিশেষ ধরনের আধকপালে মাথাব্যথা, যেটি প্রায় এবং বারবার আঘাত হানে। সাধারণত মাথার যে কোনো এক পাশের এক স্থান থেকে শুরু হয়ে ক্রমে সেই পাশের পুরো স্থানে বিস্তৃত হয়। মাথাব্যথার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর দৃষ্টিবিভ্রম, বমি কিংবা বমি বমি ভাব থাকতে পারে।

যে কারণে হয় : মাইগ্রেনের মূল কারণ জানা যায়নি। বলা হয়ে থাকে, রক্তে সেরোটোনিন অথবা ফাইভ এইচটির মাত্রা পরিবর্তিত হলে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনিগুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথায় শুরুতে স্ফীত হয় এবং ফুলে যায়। তবে এটি বংশগত হতে পারে। এটি পুরুষ অপেক্ষা নারীর বেশি হয়। দুশ্চিন্তা, মাসিকের সময় এটি বেশি হয়। দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, উজ্জ্বল আলো, কোষ্ঠকাঠিন্য এ রোগ বাড়িয়ে তোলে। পনির, চকোলেট, রেডওয়াইন মাইগ্রেন আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। দেখা গেছে, এ খাদ্যগুলোর মধ্যে উপস্থিত টাইরামিন এ জন্য দায়ী।

চিকিৎসা : ইদানীং মাইগ্রেনের বিভিন্ন চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এটির লক্ষ দুটি। প্রথমত তাৎক্ষণিকভাবে মাথাব্যথা কমানো এবং দ্বিতীয়ত মাথাব্যথার প্রকোপ কমিয়ে আনা বা নিয়ন্ত্রণে রাখা। উভয় লক্ষ্য অর্জনে ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ আছে। চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক নির্দেশনা অনুযায়ী সেই সব ওষুধের ব্যবহারবিধি জেনে প্রয়োজনমতো খাওয়া।

প্রকোপ কমানোর জন্য : ফনারিজিন, পিজোটিফেন, টোপিরামেড, এমিট্রিপটাইলিন, প্রোপানলসহ বিভিন্ন ওষুধ সম্প্রতি মাইগ্রেন নিরাময়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলাফলও ভালো।

শেষ কথা : গ্রামাঞ্চলে মাথাব্যথার রোগীকে সুতা পেঁচিয়ে তার সঙ্গে মাছি বেঁধে রাখতে দেখা যায়। বলে বাণ মারা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এরা মাইগ্রেনের রোগী। তাই মাথাব্যথায় বিপর্যস্ত না হয়ে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

 

[] ডা. সজল আশফাক

সহযোগী অধ্যাপক, নাক কান গলা বিভাগ, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts