বিরাগ-বচন
তোর হৃদয় পুড়ে খাক হয়ে যাক
দিচ্ছি অভিশাপ,
হৃদয় কেড়ে হৃদয় নিয়ে
খেলা করা পাপ।
তোর চোখেতে ছল ছিল তাই
আমার চোখে জল;
হীরা ভেবে কাঁচ নিয়েছি
সব হয়েছে জল।
বৃহস্পতি দেয়না ধরা
আশার গলায় ফাঁস
তোর চোখেতে চোখ রাখাটাই
চরম সর্বনাশ।
ব্লক করেছিস, লাইন কেটেছিস
আমার কি যায় তাতে!
মনের আলোয় দেখছি তোকে
আছিস নয়নপাতে।।।
যে হৃদয়ে লাঙ্গল দিয়ে
রক্ত গঙ্গা বহাস,
জানিস না তুই সেই হৃদয়ে
তোরই বসবাস।
দাগ রয়েই যায়
বিজন বনে অচিনপুরে
আমি সাঝের বেলায়;
নিজেকে হারিয়ে খুঁজি
নিস্তব্ধ নিরালায়।
সেথায়ও আছে দিনমনি
পরশ দিয়ে যায়
আমার মুখে হাসির রেখা
তাঁকে জানায় বিদায়।
একই রবির কিরণমালা
তাঁকেও ছুয়ে যায়;
দুইমেরুতে যদিও বসত
আমরা দু’জনায়।
কবে কোথায় হারিয়েছি,
অমূল্য সেই ধন;
যেথায় থাকুক ভাল থাকুক
চায় এ বিবাগী মন।
আমার মনের গভীর ক্ষত;
নাইবা জানলো কেউ,
হাসির রেখায় ঢেকে থাকুক
সাত সাগরের ঢেউ।।
পঁচিশ বছর পরে
মেঘনা নদীর পাড়ে
শাহবাজপুরের গোপাট ধরে
ফিরছিলাম আপন নীড়ে
জন্মভূমি গোপালপুরে;
পঁচিশ বছর পরে।
উদাস মন আমার
খুঁজে ফিরে তারে
অতীতের সমুদ্রতীরে,
কত স্মৃতি এই মেঠো প্রান্তরে!
পঁচিশ বছর ধরে।
কতজনই আসে যায়
মাঠেরাও বদলায়,
ঋতু পরিক্রমায়;
কখনো সোনালী হয়
কখনো সবুজময়;
কত জল গড়ায় মেঘনায়;
কত কাব্য মুছে যায় হাহাকারে
পঁচিশ বছর ধরে!!
যে ছিল-আছে অন্তরে
সেই শাশ্বতীরে
দু’চোখ খোজেঁ যারে
খুঁজে পাইনি তারে
এতদিন ধরে
শতসাধনায় নয়নের নীরে
পঁচিশ বছর ধরে!!
আচমকা সেই মুখ
অনতিদূরে,
স্বপ্ন-সারথি মানসীরে,
যাকে খুঁজেছি বারেবারে
তাঁকে দেখে আজ
আমি স্তম্ভিত-স্থবির।
ক্ষণকাল পরে
বাস্তবতায় আসি ফিরে।
হ্যাঁ সে-ই-তো
সেই কন্ঠস্বর;
সেই চিরচেনা মুখ
যে বাধঁন জন্ম-জন্মান্তরে
আবার এসেছে ফিরে
পঁচিশ বছর পরে!!!
আপন ছায়া
পদ্মা নদীর শীতল ধারা
বয়ে চলে দূর;
মনের মাঝে সদাই বাজে;
বিষের বাঁশীর সুর!
বসত যাদের মন-মুকুরে
তারাও চলে যায় সুদূরে,
অস্তাচলে যায় মিলিয়ে
রবির শেষের মায়া,
সবার শেষে যায় পালিয়ে;
আপন কায়ার ছায়া!
উদাসীন পথিকের মনের ব্যথা
উদাসীন পথিকের মনের ব্যথা
জানে না তো কেউ;
দক্ষিন হাওয়া শুনবে তুমি
ক্ষানিকটা দাঁড়াও।।
সাজের মায়ায় আলো ছায়ায়
তাকেই স্মরণ করি;
মনের মাঝে বসত যাহার,
অষ্ট-প্রহর ধরি।
ফাগুন মাসের আগুন হাওয়া
প্রিয়ার বুকেও বয়,
শীতল হাওয়ার পরশ দিয়ে
মন ভুলিও তায়।
ক্লান্ত কায়ায় এলো-চুলে,
আপন আঙ্গিনায়;
বসবে যখন প্রিয়া আমার,
গোমরা মুখে হায়!
তুমি তখন শীতল পরশ
বুলিয়ে দিও গায়;
মন ভোলানো কথা বলে
তাঁর ঠোটে হাসি এনো;
তার হাসিই আমার হাসি
এই কথাটি জেনো।