খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল ব্যুরো: আর কয়েকদিন পরেই ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রমজান সম্পন্ন হতে না হতেই এ উৎসবকে ঘিরে শুরু হয়ে গেছে উৎসবের আমেজ।
উৎসবের আনন্দকে নতুন ছোঁয়া দিতে নতুন পোশাক, জুতো-স্যান্ডেল কেনাটা এখন সংস্কৃতিতে রূপ নিয়েছে। আর তাই পরিবারের সদস্যরা ঈদ শপিং এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাই এসময়টাতে বরিশালের ঈদ বাজারে জমজমাট ভাব বিরাজ করছে।
গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ঈদের বেচা-বিক্রিতে এখন পুরো ব্যবসায়িক এলাকাজুড়ে কর্মব্যস্ততা বিরাজ করছে। ফুটপাত থেকে বহুতল ভবনের সব মার্কেটেই চোখে পড়ে দোকানিদের ব্যস্ততা।
প্রতিবছরের মতো বাহারি ডিজাইনের নানা নামের সব পোশাকে জমে উঠেছে বরিশালের বিপণিবিতানগুলোতে কেনাকাটা। মাসাক্কালি,আনুসকা, চুন্ডির পাশাপাশি এবারের ঈদ বাজারও সারা-রা ও গারা-রা নামে পোশাকের কবলে। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে বরিশালের ঈদ বাজারে ইন্ডিয়ান লং গাউনের কদর বেশিই বলছেন বিক্রেতারা।
নগরের চকবাজারের পোশাকের দোকান পালকীর বিক্রয়প্রতিনিধি মো. আসিফ বলেন, বাজারে মেয়েদের পোশাকের মধ্যে সারা-রা, গারা-রা, গাউন, টপস, মাছাক্কালী, আনুসকা, চুন্ডি, ইস্তার ও লেহেঙ্গা রয়েছে। কাপড় ও ডিজাইন ভেদে বাজারে মেয়েদের এসব পোশাকের দাম আড়াইহাজার থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত রয়েছে। এরমধ্যে ভালো কাপড় ও নকশায় সারা-রা,গারা-রা, মাছাক্কালী, আনুশকা পোশাকের দাম ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। তবে বাজারে এবারেও গাউনের বেচা-বিক্রি বেশি বলে যোগ করেন মৌ তাইতী পয়েন্টের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম।
একইকথা বলেন, সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের ছাত্রী সাবিহা আক্তার। তিনি বলেন, মূলত ঈদে পোশাক কেনাকাটা করার আনন্দই আলাদা। বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতীয় পোশাকের কদরই বেশি দেখছি। তবে এবার বান্ধবীরা সবাই মিলে লং গাউন কিনেছি।
অপরদিকে ঈদ বাজারে ছেলেদের জন্য রয়েছে বাহারি ডিজাইনের প্যান্ট, শার্ট, গেঙ্গি, পাঞ্জাবির সমারোহ। বাহারি ধরনের নকশা ও কাপর ভেদে বরিশালের বাজারে দেড় থেকে ৬-৮ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে পাঞ্জাবির দর। এরমধ্যে হালকা নকশায় সুতির পাতলা কাপড়ের পাঞ্জাবির কদরটাই বেশ বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর ছেলেরা পোশাক কিনতে বেশি ঝুঁকছেন ফ্যাশন হাউজ আর নামি-দামি ব্রান্ডের দোকানগুলোতে।
এদিকে পোশাক কেনার পাশাপাশি কসমেটিকস, ওড়না-হিজাব ও জুতোর দোকানে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। ছেলেদের প্রথম পছন্দ চায়নার বিভিন্ন জুতা হলেও মেয়েরা এবার দেশীয় কোম্পানির জুতো বেশি কিনছেন।
এ বিষয়ে চকবাজারের বরিশাল সু হাউজের স্বত্বাধিকারী হাজী জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, বেতন আগে হওয়ায় গত বছরের থেকে এবার বেচা-বিক্রি আগে শুরু হয়েছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবার কতোটা বেচাবিক্রি ভালো হবে তার হিসেব ঈদের পর ছাড়া বোঝা যাবে না। তবে বাজারে সবথেকে বেশি বাচ্চাদের জুতা বিক্রি হচ্ছে। নকশা অনুযায়ী ৮ শত থেকে আড়াইহাজার টাকার মধ্যেই ছেলে-মেয়েরা স্যান্ডেল কিনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
এবারেও শিশুদের জন্যও রয়েছে ঈদ বাজারে বিশেষ পোশাকের আকর্ষণ। কিন্তু গরমের কারণে ক্রেতারা শিশুদের পোশাকের ক্ষেত্রে হালকা ডিজাইনের মধ্যে সুতির পাতলা কাপড়ের পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন বেশি।
তবে গজ বা থান কাপড়ের দোকানে ভিড় নেই বললেই চলে। কাটপট্টি রোডের সৈয়দ ক্লথ স্টোরের অক্ষয় বণিক বলেন, রেডিমেট পোশাক আর অনলাইন শপের কারণে গজ কাপড়ের দোকানে ভিড় নেই বললেই চলে। যদিও এবারের থেকে গতবছরে রেডিমেট পোশাকের বাজারে বেচা-বিক্রি ভালো বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
অপরদিকে বরিশালের চকবাজারের শাড়ির দোকান স্বদেশীর নিখিল দাস বলেন, শাড়ির বাজার এখনও জমে উঠেনি। এবারের ঈদে শাড়ির বাজারে কাতান, সিল্ক, বেলগা কাতান ও জামদানি রয়েছে। এসব শাড়ি ১২শ থেকে ১৪ হাজার টাকার মধ্যেই বেচা-বিক্রি হচ্ছে বলে যোগ করেন শাড়ির দোকানি।