বাংলাদেশের ২০১ গম্বুজ মসজিদ হতে যাচ্ছে বিশ্বচমক

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বিশ্বের মানুষের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ২০১ গম্বুজ মসজিদ । এ মসজিদটি রাজধানী ঢাকা থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলের ঝিনাই নদীর তীরে নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১টি গম্বুজের মধ্যে উচ্চতায় সবচেয়ে বড় গম্বুজ হলো ৭৯ ফুট। আর অন্যগুলোর উচ্চতা ৪২ ফুট।

৪৫১ ফুট উচ্চতার কংক্রিট নির্মিত মিনারগুলোকে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনার খেতাব দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড। ৪৫১ ফুট উচ্চতা সাধারণত ৫৫ তলা বিল্ডিং সমান উচ্চতা। বাংলাদেশে এত উচ্চতার কোনো বিল্ডিং এখনও নির্মিত হয়নি। খবর আরব নিউজ।

এক সঙ্গে ১৫ হাজার লোকের নামাজের ব্যবস্থা করা হলেও লোক সমাগমের কারণে কর্তৃপক্ষ তা ৩০ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে।

২০১৩ সালের জানুয়ারিতে এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পাঁচ বছরে মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। আয়োজকরা এ মসজিদ নির্মাণে ব্যয় করেছেন ১৩০ কোটি টাকা।

টাঙ্গাইলের গোপালপুরের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম তার জন্মস্থানে যখন এ মসজিদ কমপ্লেক্স প্রকল্প নির্মাণের স্বপ্ন দেখেন। তখন তিনি গঠন করেন রফিকুল ইসলাম ট্রাস্ট। রফিকুল ইসলাম তার স্বপ্নপূরণে তার কিছু পৈতৃক সম্পত্তি এ ট্রাস্টে দান করেন। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে গ্রামবাসীরাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। অবশেষে ২০১৩ সালে ৫ একর জমির ওপর মসজিদ কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বর্তমানে এর আয়তন দাঁড়ায় ১৫ একর-এ।

mosque-2

রফিকুল ইসলামের ভাষায়, ‘আমার গ্রাম দক্ষিণ পাথালিয়া দেশের মানুষের কাছে ছিল এক অপরিচিত গ্রাম। কিন্তু এখন দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ ২০১ গম্বুজ মসজিদ কমপ্লেক্সকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের দক্ষিণ পাথালিয়াকে এক নামে চেনে। প্রত্যেক ছুটির দিন এ মসজিদ কমপ্লেক্স পরিদর্শনে আসে প্রায় ১০ হাজার মানুষ।’

এটি ছিল আমার জন্য এক ‘স্বপ্ন প্রকল্প’। যা আমি ২০ লাখ টাকায় শুরু করেছি। পরে দেশের অনেক ব্যক্তি ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। অর্থাভাবে এক মুহূর্তের জন্যও এ মসজিদ কমপ্লেক্সের কাজ বন্ধ হয়নি বলেও উল্লেখ করেন রফিকুল ইসলাম।

একটি ভিন্ন মসজিদ নির্মাণের আগ্রহে রফিকুল ইসলাম মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশের বিখ্যাত মসজিদগুলো পরিদর্শন করেন। সেগুলো দেখে তিনি এ মসজিদ নির্মাণের ধারণা নেন।

পরবর্তীতে তিনি মসজিদের নকশা গঠনে একজন বাংলাদেশি স্থপতির সঙ্গে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

২০১ গম্বুজ মসজিদ কমপ্লেক্স পরিদর্শনে বিদেশি দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তৈরি করেন হেলিপ্যাড। যাতে বিদেশি মেহমানরা মসজিদ পরিদর্শনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারেন।

২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ কমপ্লেক্সে রয়েছে: একটি ইয়াতিমখানা। মৃতব্যক্তির জানাজার জন্য থাকবে মেহরাব সংলগ্ন হিমাগার। বয়স্ক মানুষের জন্য থাকার জায়গা। এবং নারীদের জন্য রয়েছে একটি দাতব্য হাসপাতাল। দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য পুর্নবাসন ব্যবস্থা।

এ মসজিদের অনেক নির্মাণ সামগ্রী ও ফিটিংস বিদেশি। মসজিদের টাইলস এবং পার্বেল পাথর ইতালি, জার্মানি, তুরস্ক, সুইজারল্যান্ড এবং চায়না থেকে আমদানি করা হয়েছে।

মসজিদে প্রধান স্থপতি মৃন্ময় অধিকারী জানান, উপমহাদেশের ঐতিহ্য অনুসারে মিনারের সাজ-সজ্জা ও অলংকরণ করা হয়েছে।

 

 

Print Friendly

Related Posts