উদ্ধারকর্মীর বর্ণনায় কুলাউড়ার ট্রেন দুর্ঘটনা

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ঢাকামুখী একটি ট্রেন কালভার্ট ভেঙে দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চলছিল বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। পেশায় গাড়ির চালক জনি চৌধুরী বাদশা, যার বাড়ি দুর্ঘটনাস্থলের বেশ কাছে এবং দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজে ছুটে আসা প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন তিনি। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে তিনি সেখানে ছুটে যান।

তিনি জানিয়েছেন, দেখি ব্রিজের ওপরে ট্রেনটা কাত হয়ে পড়ে আছে… মধ্যে দিয়ে ভেঙে একটা বগি নিচে পড়ে আছে …দুইটা বগি লাইনের ওপরে খাড়া আছে। মানুষজন চিৎকার করছে, কারো মাথা, হাত-পা কেটে গেছে…।

‘উপবন এক্সপ্রেস’ আন্তঃনগর ট্রেনটি রোববার দিবাগত রাত সাড়ে এগারোটার দিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচাল এলাকায় একটি সেতু পার হওয়ার সময় সেতুটি ভেঙে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এরপরই তারা উদ্ধার সহায়তায় এগিয়ে আসেন।

জনি চৌধুরী বলেন, লোকজন চিৎকার করছিল। আমরা ভেতরে আটকে পড়া লোকদের বের করে আনি। ট্রেনের নিচে কয়েকজন আটকা পড়ে। ফায়ার সার্ভিস এসে এরপর উদ্ধারকাজ শুরু করে। অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ঘটনায় নিহত তিন নারীসহ চারজনের মৃতদেহ কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্থানীয় কর্মকর্তারা ৫ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন। কুলাউড়া সাব স্টেশন থেকে বলা হয়, হাসপাতালে নেয়ার পর একজন মারা যান।

দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে কুলাউড়া হাসপাতালে অর্ধশতাধিক এবং সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ জনের বেশি চিকিৎসাধীন আছেন।

ট্রেনের কয়েকজন যাত্রী জানিয়েছেন, হঠাৎ তারা একটি দুলুনি টের পান এবং এর পরেই বিকট শব্দ শোনা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান জানান, ট্রেনটি অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছিলো।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তিতাস নদীর উপরে একটি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার কারণে সড়কপথে যাত্রা ব্যাহত হওয়ার কারণে কয়েকদিন ধরে ট্রেনের ওপরে চাপ বেড়ে যায় বলে তিনি জানান। দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।।

Print Friendly

Related Posts