জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বটতলায় মিষ্টি খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে । এতে এক পুলিশ সদস্য ও তিন শিক্ষক সহ অন্তত ৬৭ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ৩০ শিক্ষার্থীকে সাভারের এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার একটি দোকানে বঙ্গবন্ধু হলের দ্বীপ বিশ্বাস (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব, ৪৬ ব্যাচ) ও তার বন্ধু আলিফ আফসান দ্বীপ (বাংলা, ৪৬ ব্যাচ) মিষ্টি খাওয়ার সময় মওলানা ভাসানী হলের সৌরভ কাপালীর (ম্যানেজমেন্ট, ৪৫ ব্যাচ) সাথে ধাক্কা লাগে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কাপালি দ্বীপ বিশ্বাসকে মারধর করে। পরবর্তীতে তারা হলের সিনিয়রদের জানালে দুই হলের শিক্ষার্থীরা পিস্তল, রামদা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় উভয় হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।
সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের মধ্যে অন্তত ১০ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে বলে জানা যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের হাবিবুর রহমান লিটন (দর্শন, ৪৩ ব্যাচ) ও শাখা ছাত্রলীগের উপ তথ্য ও প্রযু্িক্ত বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল হাসান শাওন (আইআইটি, ৪৩ ব্যাচ) সহ কয়েকজন ভাসানী হলের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে মওলানা ভাসানী হলের সোহেল (পাবলিক হেল্থ, ৪২ ব্যাচ) ও সুজন (বাংলা, ৪৩ ব্যাচ) গুলিবর্ষণ করে। প্রায় দুই ঘন্টা যাবৎ চলা এ সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে সহকারি প্রক্টর পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, নাটক ও নাট্যতত্ত্বের প্রভাষক মহিবুর রউফ শৈবাল ও ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল আহত হন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে টিআরশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ইটের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হন।
ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান জানান,‘পুলিশের সহযোগীতায় আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সক্ষম হয়েছি। পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত হওয়া পর্যন্ত বটতলা এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে।’
এদিকে মওলানা ভাসানী হলের একাধিক শিক্ষার্থীর দাবি, শাখা ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের বিরুদ্ধে। সমগ্র ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে দায়ি করে তার পদত্যাগ দাবি করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা।