ইফতেখার শাহীন, বরগুনা: বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেছে আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষে এ জামিন শুনানির আবেদন তালিকাভূক্ত করেন।
পটুয়াখালী, বরিশাল, ঢাকা এবং বরগুনাসহ প্রায় ২৫-৩০ জন আইনজীবী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিনের পক্ষে আদালতে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করেন। সকাল ১১ টা থেকে প্রায় ৪৫ মিঃ শুনানির পরে সকল যুক্তি তর্কের অবসান ঘটিয়ে শেষে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ সিরাজুল ইসলাম গাজি।
মিন্নির জামিন শুনানিতে আদালতে তার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম,অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদের, অ্যাডভোকেট দীপক চন্দ্র হালদার, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান, অ্যাডভোকেট সাহিদা বেগম, অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমানসহ ২৫-৩০ জন।এ জামিন শুনানীর সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট সঞ্জিব দাস, অ্যাডভোকেট এম. মজিবুল হক কিসলুসহ ৮-১০ জন।
মিন্নির পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, মিন্নির জামিন আবেদন না মঞ্জুর হয়েছে মুলত তিনটি কারনে। মিন্নির স্বীকারোক্তি, মিন্নির হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত স্বীকারোক্তি ও দু’জন আসামী এখনো গ্রেফতার হয়নি। আজকেই সই মোহর তুলে আমরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করবো।
সরকার পক্ষের এপিপি অ্যাড. সঞ্জিব দাস বলেন, আমরা সবাই তার জামিনের বিরুদ্ধে জোড়ালো বক্তব্য দিয়েছি। মামলার তদন্তের এ পর্যায় জামিন দেওয়া হবে ক্ষতিকর, যেহেতু মামলার এজাহারভূক্ত সকল আসামী এখনো ধরা পড়েনি। একাধিক আসামীরা হত্যা পরিকল্পনায় মিন্নির সম্পৃক্তা স্বীকার করেছে আর মিন্নি নিজেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে মিন্নির জামিন শুনানির কথা শুনে আদালতে উপস্থিত ছিলেন নিহত রিফাত শরিফের বাবা দুলাল শরীফ ও মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।
এর আগে গত ১৬ জুলাই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায় পুলিশ। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এরপর বুধবার বিকেল ৩ টার দিকে বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী।
রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার বিকেলে মিন্নি একই আদালতে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধানায় জবানবন্দি দিলে পরে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।