সাভার সংবাদদাতা: সাভার থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে আমিনবাজারের সালেহপুরে ব্রিজের নিচে তুরাগ নদে নিখোঁজ ট্যাক্সিক্যাবটির সন্ধান মেলেনি ৫ দিনেও। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানেও তলিয়ে যাওয়া ট্যাক্সিক্যাবের কোন কূল কিনারা হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, তুরাগে তীব্র স্রোতের কারণে গাড়িটা ৪৫ ডিগ্রি এঙ্গেলে ডুবে স্রোতে ভেসে দূরে চলে যেতে পারে।
ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা জোনের সহকারী পরিচালক মোস্তফা মহসিন বলেন, ট্যাক্সিক্যাবটি ব্রিজ থেকে যে বাকে পড়েছে স্রোতের বেগের কারণে সেটা ভেসে যেতে পারে বলে ধারণা করেছি আমরা। আমাদের ডুবুরিরাও সেভাবে উদ্ধার কাজ চালিয়েছে। কিন্ত উদ্ধার কাজ চালাতে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে। ব্রিজটির নিচে বড় বড় গর্ত ও পাথরের সারি রয়েছে। সেখানে পানি চক্রাকারে ঘুরে যায়। সেখানে ডুবুরিরা নামলে স্রোত তাদেরকেও টেনে নেয়। ফলে একইসঙ্গে ডুবুরিদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ট্যাক্সিক্যাবটি উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস, নৌ-পুলিশ, নৌবাহিনীর যৌথ টীম কাজ করছে। কিন্ত গাড়িটি পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা নদীর স্রোত, বেগ সবকিছু মাথায় রেখে আশেপাশের প্রায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়িটির খোঁজ করেছি। কিন্ত অতিরিক্ত স্রোতে অনেকগুলো জায়গায় পৌছানো যায় নি। পরে স্ক্যানার মেশিন দিয়েও পুরো এলাকা খুঁজে দেখা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার ট্যাক্সিক্যাবটি খুঁজে পাওয়া গেছে এমন একটি গুজব ছড়ায় উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের চৌকস টীম উদ্ধার কাজ করছে। গতকাল বিকেলের দিকে স্থানীয় কিছু অতি উতসাহী পানি নামে। তারা পানিতে বাশ দিয়ে খোঁজ করে গুজব ছড়ায় গাড়ি পাওয়া গেছে। পরে আমাদের ডুবুরিরা সেখানেও খোঁজ করে গাড়ি পায় নি।
কতদিন এই অভিযান চলবে এমন প্রশ্নে মোস্তফা মহসিন বলেন, ট্যাক্সিক্যাব নিখোঁজের পর থেকে নিরলস উদ্ধার অভিযান চলছে। তবে আজ আমরা বসবো। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও উর্ধতনদের সিদ্ধান্তে অভিযান সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর আগে রবিবার (২১ জুলাই) রাত ৮টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে হলুদ রঙের ট্যাক্সিক্যাবটি তুরাগ নদে পড়ে যায় বলে ৯৯৯’এর মাধ্যমে জানতে পারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
জানা গেছে, তুরাগ নদে পড়া আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট পরিচালিত ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের এক্সিও ২০১২ মডেলের ৪২ নম্বর ট্যাক্সিক্যাবটি চালাচ্ছিলেন জিয়াউর রহমান জিয়া (৪০)। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারীর আয়নাল মোল্লার ছেলে। ঘটনার দিন সাভার থেকে ট্যাক্সিক্যাবটি নিয়ে তিনি ঢাকা যাচ্ছিলেন।
নিখোঁজ জিয়ার মামাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জিয়া গত দুই বছর ধরে ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের ট্যাক্সিক্যাবটি চালাচ্ছিলো। সে দুই মেয়ের বাবা।
একদিকে পরিবারের উৎকণ্ঠা। অন্যদিকে প্রশাসনের ব্যাপক উদ্ধার অভিযান। কখন মিলবে ট্যাক্সিক্যাবটি? কি হয়েছিলো সেদিন চালক জিয়ার সঙ্গে?