বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ মিল্ক প্রডিউসারস কো অপারেটিভ ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্কভিটা) পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন ও বিক্রির ওপর হাইকোর্টের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠা মিল্কভিটার করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান সোমবার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর ফলে বাজারে মিল্কভিটার দুধ বিক্রিতে আইনগত কোনো বাধা রইল না।
স্থগিতাদেশের পর মিল্কভিটার পক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, আদেশটি শুধুমাত্র মিল্ক ভিটার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। কারণ মিল্ক ভিটার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।
এরআগে রোববার হাইকোর্ট মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় বিএসটিআই অনুমোদিত ১৪ কোম্পানির দুধ উৎপাদন, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয় আগামী ৫ সপ্তাহ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তবে বাকী ১৩টি কোম্পানির দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন ৫ সপ্তাহ বন্ধই থাকছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মিল্ক ভিটার অন্যতম আইনজীবী মহিউদ্দিন মো. হানিফ ফরহাদ।
আদেশের পর মহিউদ্দিন হানিফ বলেন, কেবলমাত্র মিল্ক ভিটার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। তিনি বলেন, মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলতে পরি না। হাইকোর্ট ১৪ কোম্পানির দুধ উৎপাদন ও বিক্রির যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন-এতে করে খামারিরা ও উৎপাদকরা ব্যাপক ক্ষতি এবং বিপর্যযের মুখে পড়বেন। তিনি বলেন, আদালতকে বলেছি, দুধে এন্টিবায়োটিক বা অন্য সমস্যা থাকলে তা নানা পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে দূর করতে হবে।
হাইকোর্টের সতর্কতা: মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া যাওয়ায় ১৪ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের উৎপাদন ও বিক্রিতে পাঁচ সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞার সুযোগে বিদেশি পাউডার দুধ যেন বাজার দখল করতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে বলেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো.নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই মন্তব্য করেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনউদ্দিন মানিক।
পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী সোমবার শুনানিতে আদালত বলেন, দুধ উৎপাদন কোম্পানি এবং খামারিদের ক্ষতিগ্রস্ত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। মানব দেহের জন্য দুধে ক্ষতিকারক কিছু না থাকুক, সেটিই আমরা চাই। এ সময় তরল ও গুঁড়া দুধের ওপর পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২০ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত।
সোমবার আদালতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। এসময় বিএসটিআই’র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।