ইফতেখার শাহীন, বরগুনা: বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের পূর্ব বুড়িরচর পায়রা নদী পাড়ের বেড়ী বাঁধের উপরে সিইআইপি-০১ প্রকল্পের আওতায় চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিকো স্লুইজ নির্মানে ৪’শ ফুট বেড়ী বাঁধ কেটে ফেলায় বেড়ী বাঁধ সংলগ্ন অনিন্দিতা আশ্রয়ণ প্রকল্পে জোয়ারের পানিতে ৪০ টি পরিবারের প্রায় ২’শ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিকো গ্রাম রক্ষা বাঁধ কেটে মাটি দ্বারা স্লুইজের পাশ্র্বস্থ প্রাচীর ভরাট করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন আশ্রয়ণের একাধিক বাসিন্দা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আশ্রয়ণ সংলগ্ন বাঁধ না থাকায় পায়রা নদীর জোয়ারের পানিতে আশ্রয়ণের ঘরগুলো মেঝে পর্যন্ত তলিয়ে যায়। এ অবস্থায় শিশুসহ নারী পুরুষ সবাই দিশাহারা।
আশ্রয়নের বাসিন্দা কহিনুর বেগম জানান, পায়রা নদীর পানিতে আমরা ভাসছি। ছোট বাচ্চাদের কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে রাত কাটাই। ঘরে পানি ওঠায় বসার জায়গাটুকু পর্যন্ত থাকেনা। বাথরুম, পাকঘর পানিতে তলিয়ে যায়। হাঁস, মূরগী, গরু, ছাগল কোথায় রাখবো? আশ্রয়নের চারদিকে শুধু পানি। আমরা গরীব, তাই আমাদের দুঃখ দুর্দশা কারও চোখে পড়েনা।
অনিন্দিতা আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি সেলিম মিয়া অভিযোগ করে বলেন, চায়নার সিকো কোম্পানী আশ্রয়ণ সংলগ্ন বেড়ী বাঁধ কেটে ফেলায় জোয়ারের পানিতে আশ্রয়ণ সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। আমরা সমবায় সমিতি লিঃ এর আওতায় সকল সদস্যরা চাঁদা তুলে আশ্রয়ণের একটি পুকুরে মাছের চাষ করি। সেই পুকুরের সব মাছ জোয়ারের পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। টয়লেট অকেজো, মহিলারা টয়লেটে যেতে পারছেনা। প্রতি জোয়ারে পাকঘর পানিতে তলিয়ে গেলে রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে যায়। কি খেয়ে আমরা বাঁচবো?
জানতে চাইলে সিইআইপি-০১ প্রকল্পের সিএসই গিয়াস উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাস্থলে আমাদের প্রতিনিধি গিয়েছে। অবিলম্বে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ইতোমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তারা অল্প সময়ের মধ্যেই ওখানে যে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে সেটি নিরসন করবে। আমরা আশা করি এক সপ্তাহের মধ্যেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের সকল বাসিন্দা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবে।