বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘গাঙচিল’ এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার গাঙচিল যেন ভালোভাবে ডানা মেলে উড়তে পারে, সবাই যত্ন নেবেন।’
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে ফিতা কেটে ড্রিমলাইনার ‘গাঙচিল’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর উড়োজাহাজটি পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
উড়োজাহাজটি পরিদর্শন শেষে শেখ হাসিনা বলেন, বিমান আমাদের নিজস্ব সম্পদ, তাই এর সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিমানের যাত্রীসেবার মান অধিকতর উন্নত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিমানের প্রতিটি ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে বিশ্বের বিভিন্ন রুটে বিমানের ফ্লাইট যেন যেতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। লন্ডনে স্লট বৃদ্ধি করার চেষ্টা চলছে। ড্রিমলাইনারের সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেএফকে বিমানবন্দরে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। এ রুটে বিমান চালুর চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানির জন্য দুটো কার্গো বিমান কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশে কার্গো বিমানের দাম যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঋণ গ্রহণ করে উড়োজাহাজ কেনা হলেও এখন থেকে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নিজস্ব অর্থ ঋণের মাধ্যমে বিমান ক্রয় করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই, আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে চাই, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ দেশটাকে গড়তে চাই। এক্ষেত্রে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, বিমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক, বিমান যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যায় এটির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে চিনবে জানবে সম্মান করবে। এ কারণে আন্তরিকতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিমান পরিচালনা করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) মুহাম্মদ ইনামুল বারী, বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফারহাত হাসান জামিল, পরিচালক (প্রকৌশল) খন্দকার সাজ্জাদুর রহিম, পরিচালক (প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ, চিফ ফাইনান্সিয়াল অফিসার ভিনীত সুদ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক আবু সাইদ মেহবুব খানসহ বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনার টানা ১৬ ঘণ্টা আকাশে উড়তে পারে। অন্য উড়োজাহাজের চেয়ে এর জ্বালানি খরচও ২০ শতাংশ কম। ড্রিমলাইনার গাঙচিলের ২৭১ আসনের মধ্যে ২৪টি বিজনেস ক্লাস এবং ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাসের আসন। বিজনেস ক্লাসের আসনগুলো ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত রিক্লাইন্ড এবং সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড সুবিধা রয়েছে।
গাঙচিল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফুট ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ও ওয়াইফাই সুবিধা দেবে যাত্রীদের। যাত্রীরা ইন্টারনেট ব্রাউস করতে পারবেন এবং বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অবস্থিত বন্ধুবান্ধব ও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।
গত ২৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল থেকে আনা হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ‘গাঙচিল’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘গাঙচিল’।