ইফতেখার শাহীন, বরগুনা: হাইকোর্ট থেকে জামিনাদেশ পাওয়ার পর বরগুনা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় মুক্তির পর কারা ফটকে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সরাসরি শহরের মইঠা এলাকায় তার বাবার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি। এ সময় কারা ফটকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর, ভাই আবদুল মুহিত কাফি, তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম এবং অ্যাডভোকেট মোস্তফা কাদের উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে হাইকোর্টের দেওয়া মিন্নির জামিনাদেশ বরগুনা আদালতে পৌঁছায়। হাইকোর্টের আদেশের সই করা কপি বরগুনার আদালতে এসে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই মিন্নির পক্ষে জামিননামা (বেলবন্ড) দাখিল করেন তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। এরপর সব দাফতরিক কাজ শেষ করে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে জামিনাদেশ নিয়ে কারাগারে যান মিন্নির আইনজীবী আসলাম।
২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড ২ জুলাই ভোরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকায় বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রিফাত হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ওই দিন রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
পরদিন ১৭ জুলাই বিকেলে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শুনানি শেষে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওইদিন মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন ১৯ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে মিন্নি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে, পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।