জাবিতে উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার অভিযোগে ৩ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত দুইটি প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরণের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। অবরোধ কর্মসূচীকে সমর্থন করে কয়েকজন শিক্ষককে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

এদিকে বিকাল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্যদের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচার বলে দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সিনেট সদস্য অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন, ঠিকাদার তাদের কাজ শেষে পর্যাক্রমে বিল জমা দিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড়ের পরই কেবল যথাযথ নিরীক্ষা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে বিল পরিশোধ হয়। কাজ শুরু হওয়ার আগেই অর্থ লেনদেনের অভিযোগ অযৌক্তিক।

আন্দোলনকারীদের দাবি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ঘিরে দশ তলা বিশিষ্ট ৩টি নতুন হলের জন্য স্থান পুনঃনির্ধারণ, সব ধরণের অংশীজনদের সাথে আলাপ আলোচরনার মাধ্যমে মাষ্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এবং মেগা প্রজেক্টের টাকার দুনীর্তির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা ।

আন্দোলনে অংশ নেয়া নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা তিনটি দাবি নিয়ে বার বার বলে এসেছি। এত বড় উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে প্রশাসনের নীরবতাই ও তড়িঘড়ি করে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের অর্থের সঠিক বাস্তবায়ন হবে না। যেহেতু উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেজন্য উচ্চতর তদন্ত কমিটি প্রয়োজন।’

অপরদিকে উল্লিখিত অভিযোগের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও মহামন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর হস্থক্ষেপ কামনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের রেজিস্ট্রাড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই মেগা প্রকলেল্পর দেয়া প্রস্তাব, মাষ্টারপ্ল্যান কারা করবে,তাতে কি কি বিষয় অন্তভূর্ক্ত থাকবে এবং কোন কোন স্থাপনা তৈরি করা হাবে তা সিন্ডিকেট ও সিনেট সভায় মতামত গ্রহণ বা অনুমোদন নেয়া হয়নি। তারা অভিযোগ করে বলেন মাষ্টারপ্ল্যান করার সময় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের যে কমিটি হয়েছে তাদের কারো এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের যোগ্যতা নেই । অনুগত ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে উপাচার্য অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আর্কিটেক্ট ফার্ম নির্বাচন করেন ।

অভিযোগপত্রে টেন্ডার ছিনতাইয়ের লিখিত অভিযোগের পরে ও কোন ব্যবস্থা না নিয়ে অনুগত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়ায় উপাচার্যের পরিবারের সংশ্লিষ্টতা থাকায় প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts