কাজী দুলাল, দুমকি (পটুয়াখালী): দুমকির মধ্য পাঙ্গাশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে অবৈধ ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদার নতুন ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়েও কাজ শুরু করতে পারছে না। এতে শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পুরাতন ভবনটি নিলামে বিক্রি করার পর স্থানীয় প্রভাবশালী দুই ব্যাক্তি রাতের আঁধারে একটি টিনের ঘর তুলেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, ৭৩ বছরের পুরানো মধ্য পাঙ্গাশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে নতুন ভবনের দরপত্র আহবান করা হলে পুরাতন ভবনটি নিলামে বিক্রি করা হয়। ২৫ মার্চ রাতে স্থানীয় প্রভাবশালী জাফর হাওলাদার ও বেলায়েত হাওলাদারের নেতৃত্বে লোকজন যেখানে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে সেই জমিতে একটি টিনের ঘর তুলে তা দখলে নেয়। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করলে প্রভাবশালীরা নিজেদের জমি বলে দাবি করে। এই অবস্থায় বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে আছে। কাজ শুরু না হওয়ায় নতুন ভবন নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে টিনের ছাপরার ভেতর শিক্ষার্থীদের একত্রে বসিয়ে পাঠদান প্রদান করা হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ পাঙ্গশিয়া মৌজার এসএ ৩২৪ ও ১২৭৮নম্বর খতিয়ানের ৩৫৮৫ নম্বর প্লটের উপর বিদ্যালয় ভবনটির অবস্থান উল্লিখিত দাগ ও খতিয়ানের অবৈধ দখলদারদের কোন সত্ত্ব নেই। উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনে এর প্রমাণ মিলেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করতেই একটি পক্ষ অবৈধ দখলদার চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জাফর হাওলাদার ও বেলায়েত হাওলাদার বলেন তাদের দাদা সেখানে স্কুল নির্মাণের জন্য জমি দিয়েছিলেন। তারা উল্লিখিত দাগ ও খতিয়ানের অর্ধেক অংশের মালিক। এখানে দখলের কোন ঘটনা ঘটে নাই।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিলাল সিকদার জানান, জমিজমা সংক্রান্ত জটিলতায় স্কুলটির ভবন নির্মাণ আটকে আছে। স্কুলটির দাতাদের অংশে অংশীদারি নিয়ে বিরোধের জেরে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় স্কুল ক্যাম্পাসে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে লিখিতভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শন শেষে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।