বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের বিশেষ করে ভারতের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে উদার পরিবেশ বিরাজ করছে।
নয়াদিল্লীর হোটেল তাজ প্যালেসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের ইন্ডিয়া ইকোনোমিক সামিটে বাংলাদেশের উপর কৌশলগত আলোচনাকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারী বিশেষ করে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের শিক্ষা, হাল্কা প্রকৌশল শিল্প, ইলেক্ট্রনিক্স শিল্প, অটোমোটিভ শিল্প, কৃত্তিম বৃদ্ধিমত্তা শিল্পের মতো ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগ করার সময়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি স্বাধীন ও উদার বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে। বিনিয়াগ বান্ধব বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরদের জন্য আইনী সুরক্ষা, উদার রাজস্ব ব্যবস্থা, মেশিনপত্র আমদানীর ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়, আনরেস্ট্রিকটেড এক্সিট পলিসি, সম্পূর্ণ বিনিয়োগ ও পুঁজি নিয়ে চলে যাবার সুবিধাসহ নানাবিধ সুবিধা রয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নিরবিচ্ছিন্ন সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত করে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছি। এদের মধ্যে ১২টি অঞ্চল ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। দুটি অঞ্চলকে ভারতের বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। প্রয্ুিক্ত ও উদ্ভাবণী প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশ কয়েকটি হাই-টেক পার্ক প্রস্তুত করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশর এই ব্যাপক উন্নয়নের জন্য সামাজিক মূল্যবোধ ও বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রশংসা করে বলেন, ‘অনেকেই বাংলাদেশকে ৩ কোটি মধ্য ও উচ্চবিত্ত মানুষের একটি বাজার’ ও ‘অলৌকিক উন্নয়নের’ হিসেব দেখে থাকেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের প্রধান শক্তি হচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধ ও বাংলাদেশের প্রতি মানুষের আস্থা। সাম্যতা, সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার আকাক্সক্ষার পাশাপাশি আমাদের নেতৃত্বের প্রতি তাদের আস্থা।’
৪০টি দেশের ৮শ’ প্রতিনিধি দুই দিনের এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। আগামীকাল সম্মেলনটি শেষ হবে। সমাপনী অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতা দিবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক এবং ভারতীয় ব্যবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্থান হিসাবে নজর কাড়ার মত যোগ্যতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, আমরা এই উপ-অঞ্চলের জন্য একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র হতে পারি। আমাদের নিজস্ব ১৬২ মিলিয়ন জনসংখ্যার বাইরেও বাংলাদেশ প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষের একটি ভূখন্ডের সম্মিলিত বাজারের সাথে সংযুক্ত হতে পারে।
তিনি গত বছরের এইসএসবিসি’র পূর্বাভাসের উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে ২৬ তম সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হবে। দু’টি বিষয় গুরুত্ব¡পূর্ণ, এর একটি হচ্ছে আমাদের উন্মুক্ত সমাজ, ধর্মীয় সম্প্রীতি, উদার মূল্যবোধ, ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতি। অপরটি হলো আমাদের মোট জনগোষ্ঠির দুই তৃতীয়াংশ তরুন। এদের বেশির ভাগের বয়স ২৫ বছরের নিচে। তারা দক্ষতা অজর্ন করছে, তারা প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন, তারা প্রতিযোগিতামূলক কাজে যুক্ত হতে প্রস্তুত।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আত্মবিশ্বাসী জনগণ, সুযোগ্য নেতৃত্ব এবং শাসনপ্রক্রিয়ায় উন্নয়ন যাত্রায় আমরা অব্যাহত ভাবে শিখছি। তিনি বলেন, একটি স্থিতিশিল ও মানবিক রাষ্ট্র বাংলাদেশের নেতৃত্ব খুবই সংবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল, সেইসঙ্গে দেশটির রয়েছে দৃঢ় সামষ্টিক অর্থনৈতিক বুনিয়াদ, সম্ভনাময় ও মুক্ত অর্থনীতি যা একটি শান্তিপূর্ণ ও অগ্রসর জাতি উদাহরণ সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে।