বুয়েটে আন্দোলন শিথিল, যথাসময়েই ভর্তি পরীক্ষা

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে আগামী ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষার পর আবারো তারা সমবেত হয়ে আন্দোলনে নামবেন। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তারা এ ঘোষণা দেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আগামী ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন তারা ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে শিক্ষকদের প্রতিও তাদের আস্থার কথা জানিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান বুয়েট শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে ছিলেন।

তারা বলেন, আমাদের দাবি ১০টা। এর মধ্যে পাঁচটা পূরণ হলে বাকি পাঁচটা বাকি। আমাদের সব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আগামী দুইদিন আমরা এসব বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো।

এর আগে শনিবার আবরার হত্যার প্রতিবাদের শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি মেনে নিয়ে নোটিশ আকারে প্রকাশ করেছে বুয়েট প্রশাসন। শনিবার দাবি অনুযায়ী বুয়েট প্রশাসন পাঁচটি নোটিশ জারি করে।

জারিকৃত নোটিশগুলো হলো:

১. হত্যাকারীদের বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে। আদালতে অন্য কেউ দোষী হলে তাকেও বহিষ্কার করা হবে। নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। ২. অবৈধ ছাত্রদের ছিট বাতিল করা হবে। ৩. ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসন সক্রিয় থাকবে। ৪. হলগুলোর সিসিটিভি সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে থাকবে। ৫. সব রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করা হলো।

এর আগে শুক্রবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে ১৪ অক্টোবর প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু আগে শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি পূরণের আহ্বান জানান। শনিবার দুপুর ১২টায় সমাবেশের শুরুতে এসব কথা বলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা। এর আগে আবরার ফাহাদ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং ৫ দফা দাবি আদায়ে বুয়েট শহীদ মিনারের সমাবেশে অংশ নিতে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশের শুরুতে ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেন, ভিসি স্যার চাইলে আমাদের পরিবর্তিত ৫ দফা দাবি এক ঘণ্টাতেই পূরণ সম্ভব। ৫ দফা দাবি পূরণ না হলে ১৪ অক্টোবরের ভর্তি পরীক্ষা হতে দেয়া হবে না।

৫ দফা দাবিগুলো হলো: হত্যাকারীদের বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এ মর্মে নোটিশ দেওয়া, সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য অবৈধ ছাত্রদের সিট বাতিল করা, সাংগঠনিক অফিস সিলগালা করা, ফাহাদের মামলার খরচ দেওয়ার নোটিশ দেওয়া ও ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সব হলের সিসিটিভির ফুটেজে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা।

বুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের রুম সিলগালা : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিভিন্ন আবাসিক হলে চলছে পুলিশের অভিযান। অভিযানে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার জামিউশ সানি এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের কক্ষ সিলগালা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা (ডিএসডব্লিউ) মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে আহসান উল্লাহ হলে ছাত্রলীগের সভাপতি ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র জামি উস সানির ৩২১ নম্বর কক্ষ এবং শেরে বাংলা হলে সাধারণ সম্পাদক ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের মেহেদী হাসান রাসেলের ৩০১২ নম্বর কক্ষ সিলগালা করে বন্ধ করা হয়।

পরে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা ঘোষিত পদক্ষেপ অনুযায়ী হলে অবৈধ ছাত্রদের রুম সিলগালা করা শুরু করেছি। সিম্বলিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রথম দিনে আমরা কয়েকটি হলের ৩-৪টি রুম সিলগালা করি। হলে ছাত্রত্বের বৈধতা না থাকায় তাদের রুমগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। এই অভিযান চলমান থাকবে এবং বাকীগুলো হল প্রভোস্টের নেতৃত্বে সিলগালা করে দেওয়া হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts