জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহ করে নারীর প্রতি অবমাননা এবং আন্দোলনের নামে সহিংস কর্মসূচীর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। মানববন্ধনে প্রায় শতাধিক নারী শিক্ষক অংশগ্রহন করেন। এসময় বক্তারা বলেন, ‘কুশপুত্তলিকা দাহ করার মাধ্যমে সকল নারী সমাজকে অবমাননা করা হয়েছে। আর শাড়ি নারী অগ্রযাত্রা ও সম্মানের প্রতীক। শাড়ি পোড়ানোর মধ্য দিয়ে নারীর প্রতি তাদের বিদ্বেষ ও সহিংস মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। আমরা মনে করি কোন শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা দাহ করা শিক্ষকসুলভ কোন আচরন নয়।’
মানববন্ধন শেষে নারী অপমানের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বারতা চক্রবর্তী বলেন, ‘কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগ করে বাংলাদেশের প্রথম নারী উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামকে পদচ্যুত করার জন্য কয়েকজন শিক্ষক ও কিছু শিক্ষার্থী এমন কিছু কর্মসূচী অবলম্বন করেছেন যা নারীর জন্য অবমাননাকর। কিন্তু কর্মসূচীর নামে বল প্রয়োগ করা, নারীকে অসম্মান করা মেনে নেওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারী বিদ্বেষী আন্দোলনকারীগন কুশপুত্তলিকা দাহ করার মাধ্যমে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। উপাচার্যের মুখচ্ছবি সংযুক্ত করে শাড়িতে আগুন ধরিয়েছে।’
বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘আবহমানকাল ধরে শাড়ি বাঙ্গালী নারীর সম্মানের প্রতীক হয়ে আছে। শাড়িতে আগুন ধরিয়ে চরম নারী বিদ্বেষীরা কেবল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদেরই অপমান করেনি বরং একই সঙ্গে অপমান করেছে বাঙ্গালী নারীর অগ্রণী ভূমিকা রাখা সকল সম্মানিত নারীদের ।’
এসময় উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করার দায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষক অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক ড. তারেক রেজা, অধ্যাপক ড. খবির উদ্দিনসহ সহিংস কর্মসূচীতে জড়িতদের বিচার দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা নারীর প্রতি এমন বিদ্বেষের প্রতিবাদে বাংলাদেশ মহিলা সমিতিসহ বিভিন্ন নারী অধিকার সংগঠনকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।
প্রসঙ্গত, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গত ২০ অক্টোবর উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। এর মাধ্যমে উপাচার্যকে কোনো প্রসাশনিক কাজ করতে দওেয়া হবে না বলেও ঘোষণা দেন তারা।