বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ জয়নাল হাজারীকে দলের উপদেষ্টা মনোনীত করে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এ চিঠি, ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জয়নাল হাজারীর হাতে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে এক অনির্ধারিত বৈঠকে জয়নাল হাজারীকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু পরদিনই এটি অস্বীকার করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি তার জানা নেই।’
শুধু তাই নয়, গত রোববার ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগেও স্থানীয় সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবেও জয়নাল হাজারীর প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান ওবায়দুল কাদের।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকেই ওবায়দুল কাদের জয়নাল হাজারীর বিপক্ষে ছিলেন। তিনি চাচ্ছিলেন না, ফেনীর এই নেতাকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা করা হোক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে জয়নাল হাজারীকে এই চিঠি পাঠাতে বাধ্য হন ওবায়দুল কাদের।
জয়নাল হাজারী বরাবর লেখা এ চিঠিতে বলা হয়, আনন্দের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আপনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। আশা করি, আপনার শ্রম, মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে সংগঠনে নতুন গতিবেগ সঞ্চারিত করতে সহায়তা করবেন।
জয়নাল হাজারী ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফেনী-২ (সদর) আসন থেকে ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে টানা তিনবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০১ সালের ১৭ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান জয়নাল হাজারী। এরপর দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। ফেনী থেকে হাজারিকা নামে প্রকাশিত একটি দৈনিকের সম্পাদকও তিনি।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ফিরেন তিনি। পাঁচটি মামলায় ৬০ বছরের সাজা হয় তার।
এরপর ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করলে আট সপ্তাহের জামিন পান হাজারী। পরে ১৫ এপ্রিল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। চার মাস কারাভোগের পরে ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হন তিনি।
শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় সম্প্রতি জয়নাল হাজারীকে চিকিৎসার জন্য ৪০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই অনুদানের চেক গ্রহণ করতে হাজারী গণভবনে গেলে তার সঙ্গে রাজনীতি নিয়েও অনেক কথা হয় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন এবং তার সুস্থতা কামনা করেন।