জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে নিষেধাজ্ঞার সময় এক সরকারি কর্মকর্তার বাসায় মিললো বিপুল পরিমানে মা ইলিশ। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ কিনে তা মজুদ করার দায়ে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রাহমানকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
গতকাল সোমবার ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এ বি এম আরিফুল হক এই সাজা দেন।
দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশিকুর রহমান নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাঁর সরকারি বাসভবনে একটি ড্রিপ ফ্রিজে বিপুল পরিমাণ মা ইলিশ মজুদ করে রেখেছেন- গোপন সূত্রে এমন খবর পান জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সোমবার বেলা দুইটার দিকে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন ওই বাসায় অভিযান চালান। এ সময় ড্রিপ ফ্রিজে প্রায় এক মণ ইলিশ পাওয়া যায়। বেলা আড়াইটার দিকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এবিএমা আরিফুল হক এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওই বাসায় যান।
এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ক্ষমা করে দেওয়া জন্য তদবির শুরু করেন। আওয়ামী লীগের ওই নেতা একজন জেলেকে ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে নিয়ে আসেন। ওই জেলে বলেন, নিষেধাজ্ঞার আগে ৭ অক্টোবর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাঁর কাছ থেকে এসব ইলিশ কিনেছেন। তবে ভ্রাম্যমান আদালতকে তিনি ইলিশ কেনার কোনো রশিদ দেখাতে পারেননি।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশিকুর রাহমান ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে ইলিশ কিনে নিজের সরকারি বাসার ফ্রিজে মজুদ করার দায় স্বীকার করেন। এর পর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এবিএম আরিফুল হক মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
আরিফুল হক বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জরিমানার অর্থ নগদ পরিশোধ করেছেন। জব্দ করা এক মণ ইলিশ জেলা কারাগারে বিতরণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাক্তার আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, এ বিষয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
যোগাযোগ করা হলে মানিকগঞ্জে জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার আপিল করার সুযোগ রয়েছে। অপরদিকে নৈতিক স্খলনের জন্য সংশ্লিস্ট বিভাগ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।