বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ তরুণ পরিচালক অরণ্য পলাশ নির্মাতা হিসেবে পরিচিত হলেও এখন সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম হয়েছেন হোটেল বয় হিসেবে। ‘অর্থাভাবে সিনেমার পরিচালক এখন হোটেল বয়’- এমন শিরোনামের অসংখ্য সংবাদ অর্ন্তজালে ভাসছে।
‘গন্তব্য’ নামে একটি ছবির কাজ শেষ হলেও শেষ পর্যন্ত ছবিটি মুক্তি দিতেই পারেননি। সিনেমাটি এরই মধ্যে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে। কিন্তু নির্মাতার স্বপ্নের এই চলচ্চিত্র গন্তব্য খুঁজে পাওয়ার আগেই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। অথচ ছবির জন্য সবকিছু বিক্রি করে তিনি এখন নিঃস্ব।
সিনেমার মাঝপথেই ছেড়ে চলে যান ছবির প্রযোজক। সেই মূহুর্তে ছবির হাল ধরেন এলিনা শাম্মী। নিজের জমি বিক্রি করে ৪৫ লক্ষ টাকা দেন অরণ্যকে ছবির কাজ শেষ করার জন্য। অন্যদিকে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে অরণ্য পলাশ ও এলিনা শাম্মী দুজনে স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু বিষয়টি অস্বীকার করলেন শাম্মী।
এলিনা শাম্মী বলেন, আমি আর পলাশ স্বামী-স্ত্রী না। আমরা দুজন ব্যবসায়িক পার্টনার। অনেককেই দেখেছি মনগড়া নিউজ করেছে। গন্তব্য সিনেমাটি শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে ছবিটির প্রযোজক পালিয়ে যান। তখন আমি ছবিটি করার জন্য নিজের জমি ও গয়না বিক্রি করে এতগুলো টাকা এনে দেই তাকে।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে একটা রেওয়াজই হয়ে গেছে যে, একটা ছেলে মেয়ে একসাথে বা অনেকদিন কাজ করলে সেটার পরিণতি এভাবেই শেষ হয়। একসাথে অনেকদিন কাজ করলে সবাই ভাবে তারা তো প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রী। আরেকটা কথা আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, অরণ্য পলাশ যদি বলে থাকে যে আমি তার স্ত্রী, তাহলে সেটা হয়তো সে যে টাকাটা নিয়েছে সেটা জায়েজ করার জন্য বলতে পারে। স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া তো পরিবারের কাছ থেকেই নেওয়া। সেটা তো দোষের কিছু না। কিন্তু আমি তো তার পরিবার না। আমি তো আলাদা একজন মানুষ। আমার কাছ থেকে সে টাকা নিয়েছে, সেটা তার ফেরত দিতে হবে।
আমি সুইট টেলিফিল্মসের চেয়ারম্যান, যেই ব্যানারে এই ছবিটি নির্মিত হয়েছে। আমরা ব্যবসায়িক পার্টনার হওয়ায় আর আমিও যেহেতু অভিনয় করেছি তাই আমি টাকাটা দিয়েছি। আর আমি প্রযোজকও না। আমার এই প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু বিজ্ঞাপন নির্মিত হয়েছে। এটা তো সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও না। ছবিটা আটকে যাওয়াতে আমি সেই সাহায্যটা করেছি।
তিনি আরও বলেন, যাই হোক না কেন, আমাদের চাওয়া হচ্ছে ছবিটা মুক্তি পাক। এই ছবিটা করতে গিয়ে তো মূলত আমি নিঃস্ব হয়েছি। ৪৫ লাখ টাকা কিন্তু মুখের কথা না। জমি বিক্রি করে, বাবার কাছ থেকে,বন্ধুর কাছ থেকে লোন এরপর আমার জমানো কিছু টাকা সব মিলিয়ে এই টাকাটা আমি এনেছি। কৌশলে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতিতে সিনেমাটি নিজের নামে নিবন্ধন করান পলাশ। সেখানে আমার নামটাও নেই।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে যে, এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য ফেরদৌস ভাই একরকম পারিশ্রমিক নেয় নি বললেই চলে। উনি শুধু বুকিং মানিটা নিয়েছেন। এরপর সে কোনদিন ছবির জন্য টাকা চায় নি। বিশ্বাস করবেন না যে, এই ছবিটার জন্য শিল্পীরা সবাই কি পরিমাণ হেল্প করেছেন,কষ্ট করেছেন! ছবিটির জন্য অনেকেই টাকা পাবে। তারা আমার কাছে টাকা চাচ্ছেন। তারা হচ্ছে দিন আনে দিন খায় এমন মানুষ। আমি সবার আগে চাইবো এই মানুষগুলার টাকাগুলা যেন পরিশোধ করে দেওয়া হয়।
ছবিটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস, আইরিন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, কাজী রাজু, আফফান মিতুলসহ আরও অনেকে।