বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রাজকোটে সিরিজ সমতায় ফেরাল ভারত। বাংলাদেশের দেয়া ১৫৪ রানের টার্গেট ১৬তম ওভারেই পূর্ণ করতে সক্ষম হয় রোহিতের ব্যাটিং দৃঢ়তায়। ৮উইকেটে জয় পায় ভারত।
জয়ের নায়ক রোহিত হলেও বাংলাদেশি তরুণ লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের কারণেই সেঞ্চুরি মিস হলো রোহিত শর্মার। ভারত সেরা এ ওপেনার অনবদ্য ব্যাটিং করে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন।কিন্তু আমিনুলের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হওয়ার কারণে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরির সুযোগ মিস করেন রোহিত।
বিপ্লবের বলে পরিবর্তীত ফিল্ডার মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে ক্যাচ তুল দেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। সাজঘরে ফেরার আগে ৪৩ বলে ৬টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮৫ রান করেন রোহিত শর্মা।
তার আগে শেখর ধাওয়ানের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ১১৮ রান যোগ করেন তিনি। তাদের জুটিতেই ১৫৪ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে জয়ের দুয়ারে চলে যায় ভারত।
জিতলেই ট্রফি নিশ্চিত এমন সমীকরণের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। কিন্তু ভালো শুরুর পরও বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনের কারণে বড় স্কোর গড়ার স্বপ্ন দেখানো বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১৫৩ রান করতে সমর্থ হয়।
বৃহস্পতিবার রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ। তরুণ ওপেনার মোহাম্মদ নাইম শেখকে সঙ্গে নিয়ে উড়ন্ত সূচনা করেন লিটন কুমার দাস।
উদ্বোধনী জুটিতে ৭.২ ওভারে ৬০ রান সংগ্রহ করেন লিটন-নাইম। ব্যক্তিগত ২৯ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন লিটন। অবশ্য তার ১৭ রানেই আউট হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে যান লিটন।
দলীয় ৪৩ রানে যুজবেন্দ্র চাহালের লেগ স্পিন বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন লিটন। কিন্তু ভারতীয় তরুণ উইকেটকিপার রিশব প্যান্ট, চাহালের করা বলটি স্ট্যাম্প পার হওয়ার আগেই গ্ল্যাভসবন্দি করে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন।
ক্রিকেটীয় আইনের পরিপন্থী স্ট্যাম্পিং করায় ফিল্ড আম্পায়ার রিভিউ দেখে লিটনকে নট আউটের সিদ্ধান্ত দেন। যে কারণে নিশ্চিত আউট থেকে বেঁচে যান লিটন।
এরপর রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে দ্বিতীয়বার লাইফ পান তিনি। কিন্তু দুইদফা জীবন পেয়েও বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ হন জাতীয় দলের এ ওপেনার। আগের ম্যাচে ৭ রানে আউট হওয়া লিটন এদিন ফেরেন ২১ বলে ২৯ রান করে। তার বিদায়ে ৭.২ ওভারে দলীয় ৬০ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙে বাংলাদেশের। ভারত সফরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় মোহাম্মদ নাইম শেখের। দিল্লি জয়ের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে অভিষেকে ২৮ বলে তিনি করেন ২১ রান।
বৃহস্পতিবার নিজের দ্বিতীয় উদ্বোধনীতে অসাধারণ ব্যাটিং করে ৬০ রানের জুটি গড়ার পাশাপাশি ব্যক্তিতগতভাবে ৩১ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩৬ রান করে ফেরেন নাইম। তার বিদায়ে ৮৩ রানে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
আগের ম্যাচে ৬০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে জয় উপহার দেয়া মুশফিকুর রহিম এদিন সুবিধা করতে পারেননি। ৬ বলে মাত্র ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ে ১২.১ ওভারে ৯৭ রানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
আগের ম্যাচে ওপেনিংয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত খেলা সৌম্য সরকার আজ খেলেন তিন নম্বর পজিশনে। দিল্লি জয়ের ম্যাচে ৩৯ রানের দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে যাওয়া সৌম্য রাজকোটেও দাপুটে ব্যাটিং করেন। ভারতীয় লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২০ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ৩০ রান করেন সৌম্য।
দলীয় ১০৩ রানে লিটন,নাইম,মুশফিক আর সৌম্য আউট হওয়ার পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তরুণ অলরাউন্ডার আফিফ হোসেনের সঙ্গে ১৭ রানের জুটি গড়েন। এরপর মোসাদ্দেক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস শেষ হওয়ার ৯ বল আগে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন রিয়াদ। তার আগে ২১ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৩০ রান করেন তিনি।
শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর আমিনুল ইসলামরা ঝড় তুলতে না পারায় শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৫৩ রান করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।