জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করলেও ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে চলছে আন্দোলন। ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করলেও উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে চলছে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ সহ নানা কর্মসূচী।
শুক্রবার আবহাওয়ার বৈরী ভাব থাকলেও থেমে থাকেনি আন্দোলন কর্মসূচী। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দুর্নীতির প্রতিবাদে করা হয়েছে ব্যঙ্গাত্মক চিত্রাঙ্কন ও বিক্ষোভ মিছিল।
বেলা ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনের রাস্তায় ৬০ গজ দীর্ঘ কাপড়ের ব্যানারে প্রতিবাদী উক্তি ও চিত্র অঙ্কন করেছে আন্দোলনকারীরা। চিত্রাঙ্কন শেষে তা বিকাল সাড়ে চারটায় ক্যাম্পাসে প্রদর্শন করা হয়। সর্বশেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত প্রদর্শনী শেষে পটচিত্র সহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল করার কথা রয়েছে।
ব্যঙ্গাত্মক পটচিত্রের বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেন, ‘পটচিত্রের মাধ্যমে অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রকাশ করছি আমরা। এসব পটচিত্রে উপাচার্যের দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাসহ সব অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জাবি উপাচার্যের দুর্নীতির প্রমাণ সংগ্রহ করেছে আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার আন্দোলনকারীদের একটি দল ‘দুর্নীতির’ তথ্য উপাত্ত নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রালয় ও ইউজিসিতে সরবরাহ করার কথা ছিল।
এ বিষয়ে আন্দোলনের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কাছে তথ্য- প্রমাণ জমা দেওয়া হবে। আমাদের কাছে যে প্রমাণগুলো আছে তাতে করে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আর কোনভাবেই তার পদে থাকতে পারেন না।’
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাপ্পু বলেন, ‘উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রধানমন্ত্রী তথ্য-প্রমাণ চেয়েছেন, আমাদের কাছে যতটুকু প্রমাণ আছে আমরা তা পাঠাবো। আমরা মনে করি আমাদের কাছে যে তথ্য-উপাত্ত আছে তা উপাচার্যের দুর্নীতি প্রমাণে যথেষ্ট।’
এদিকে উপাচার্যের দুর্নীতির প্রমাণের বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর বলেন, ‘উপাচার্য, উপাচার্যের ছেলে প্রতীক, উপাচার্যের স্বামী, জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দম হোসাইন, সহ সভাপতি নিয়ামুল হাসান তাজসহ অভিযুক্তদের কল রেকর্ড থেকে দুর্নীতির সুষ্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে। তাদের ৮, ৯ ও ১০ অগাষ্টের ফোন কল চেক করলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে।’ এছাড়া শিডিউল ছিনতাই থেকে শুরু করে উন্নয়ন প্রকল্পের প্রত্যেকটি কাজে অনিয়ম পাওয়া যাবে বলেও দাবি করেন ছাত্রলীগের এই নেতা।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর এক প্রেস বিজ্ঞাপ্তি মাধ্যমে ক্যাম্পাসে সকল মিছিল, সমাবেশ নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্ত আন্দোলনকারীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল, খাবার দোকান ও আশেপাশের সকল দোকান বন্ধ করে দেয় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।
এম.এম/বিডিমেট্রোনিউজ