বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বাজার থেকে পেঁয়াজ উধাও হয়ে গেছে। ‘পেঁয়াজ নেই’ বলে কৃত্রিম সঙ্কটের এই আতঙ্ক ছড়িয়ে দাম হাকা হচ্ছে ইচ্ছেমতো। অতি মুনাফা খোর ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছড়িয়ে পড়ছে খুচরা বাজারেও। দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে দাম। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ। পেঁয়াজের অস্বাভাবিক এই দাম বৃদ্ধির মূলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভোক্তা স্বার্থে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক করতে জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, আপৎকালীন সঙ্কট মেটাতে আগামীকাল রোববার থেকে জরুরী ভিত্তিতে মিসর থেকে কার্গোবিমানে করে পেঁয়াজ আনা হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত প্রতিদিন কার্গো বিমানযোগে ধারাবাহিক পেঁয়াজ আনা হবে দেশে। এছাড়া সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রথমবারের মতো তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে। এর আগে টিসিবি দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সেই পেঁয়াজ কম দামে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করে আসছিল। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কোন কোন বাজারে জাত ও মানভেদে ২৪০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি পেঁয়াজ। পেঁয়াজের ঝাঁজে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার।
জানা গেছে, পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দামে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। স্বল্প আয়ের মানুষ ইতোমধ্যে মসলা জাতীয় এই পণ্যটির ব্যবহার বাদ দিয়েছেন। পেঁয়াজ ছাড়াই রান্না হচ্ছে তরকারি। বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন সরকার। শুক্রবার ছুটির দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সারাদিন অফিস করেন। বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে একটি জরুরী বৈঠক করা হয় মন্ত্রণালয়ে। ওই বৈঠকে জরুরী ভিত্তিতে পেঁয়াজ আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশের অন্যতম ব্যবসায়িক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপকে দ্রুত পেঁয়াজ আনার জন্য সরকারী নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই শিল্প গ্রুপকে বাংলাদেশে অবস্থিত মিসর দূতাবাস সর্বাত্মক সহযোগিতা দিচ্ছে। আগামীকাল রবিবার মিসর থেকে ধারাবাহিকভাবে বিমানযোগে পেঁয়াজ আনা হবে।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন বলেন, পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত রয়েছে। এ কারণে বাজার তদারকি করার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম সর্বদা মাঠে রয়েছে।
তিনি বলেন, এর পাশাপাশি জরুরী ভিত্তিতে মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আনা হচ্ছে। কার্গো বিমানযোগে পেঁয়াজ আনার জন্য এস আলম গ্রুপকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারীভাবে এই প্রতিষ্ঠানকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। বাণিজ্য সচিব আরও বলেন, নতুন পেঁয়াজ না ওঠা পর্যন্ত কার্গো বিমানে করে মসলা জাতীয় এই পণ্য আমদানি করবে এস আলম গ্রুপ। এছাড়া মিসর ও তুরস্ক থেকে সমুদ্র পথে প্রায় ৬০ হাজার মে.টন পেঁয়াজ আনা হচ্ছে। ওই পেঁয়াজ বাংলাদেশের পথে রয়েছে। তিনি বলেন, সরকারী এসব উদ্যোগের ফলে দ্রুত পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।