যেভাবে অলআউট বাংলাদেশ

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ শুকনো পিচ। ম্যাচ শুরুর দিন দুয়েক আগেও পিচ ছিল গাঢ় সবুজ। ম্যাচের দিন রং কিছুটা ফিকে। পিচের চেহারায় উদ্দীপ্ত হয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন বটে, তবে আখেরে লাভ কিছুই হয়নি। প্রথম সেশনেই ৬ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা বাংলাদেশ শেষপর্যন্ত অলআউট হয়েছে ১০৬ রানে।

ভারতীয় পেসারদের দাপটে প্রথমবার পিঙ্ক বল টেস্ট খেলতে নেমে নাজেহাল অবস্থা বাংলাদেশের। প্রথমে ব্যক্তিগত ৪ রান করে ফেরেন ইমরুল কায়েস। এরপর মুমিনুল হক খাতার খোলার আগেই।

মুমিনুলের পাশাপাশি আরও দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুনও ফেরেন শূন্য রানেই। উমেশের আগুনে গতি, ইশান্তের সুইংয়ে বাংলাদেশ টপঅর্ডারে ব্যাটিং হারাকিরি। ব্যাট হাতে সাদমান ইসলাম ২৯ রান করলেও দু’অঙ্কের রানে পৌঁছাতে ব্যর্থ প্রথমসারির ছয় ব্যাটসম্যান। সবাই মিলেও তিন অঙ্ক ছুঁতে ঘাম ঝরল তাতে।

এর আগে টেস্টে দশবার একশ রানের আগে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। আজও সেই স্মৃতি ফিরেছিল। শেষ পর্যন্ত তেমনটা ঘটেনি।

সপ্তম ওভারে ইশান্ত শর্মার প্রথম বলে ইমরুল কায়েসকে কট-বিহাইন্ড আউট দেন আম্পায়ার জোয়েল উইলসন। রিভিউ নেন ইমরুল। বল ব্যাটে না-লাগায় বেঁচে যান তিনি।

সপ্তম ওভারেই এলবিডব্লিউ হন ইমরুল কায়েস, ইশান্ত শর্মার করা তৃতীয় বলে। ডিআরএস নিলেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদল হয়নি। সেই সঙ্গে গোলাপি বলে ভারতের হয়ে প্রথম উইকেটটেকার হয়ে যান ইশান্ত। এরপর উমেশ যাদবের প্রথম বলে ব্যাটের কানা লাগিয়ে বসেন মুমিনুল হক। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন রোহিত শর্মা।

উমেশের একই ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড মোহাম্মদ মিঠুন। খাতা খোলার আগেই সাজঘরে তিনি। মোহাম্মদ সামির বলে বোল্ড হন মুশফিকুর রহিম। তিনিও খাতা খুলতে পারেননি। মুমিনুল ও মিঠুনের পর বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসাবে শূন্য রানে ফেরেন সবচেয়ে অভিজ্ঞ এ মিডলঅর্ডার ভরসা।

লিটন দাস অবসৃত হওয়া মাত্রই আম্পায়াররা সাপার ব্রেক ঘোষণা করেন। দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ৭৩ রান তোলে।

১৫তম ওভারে উমেশ যাদবের দ্বিতীয় বলে কট-বিহাইন্ড হন সাদমান। ইনিংসে উমেশ যাদবের তৃতীয় উইকেট। তার করা ২৯ রানই শেষ পর্যন্ত দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস হয়ে থাকে।

২০তম ওভারে ইশান্ত শর্মার চতুর্থ বলে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অসাধারণ ক্যাচ ধরেন ঋদ্ধিমান সাহা। ইনিংসে ইশান্তের দ্বিতীয় শিকার রিয়াদ করেন ৬ রান।

পরের ওভারেই সামির বল লিটন দাসের হেলমেটে লাগে। ফিজিও’র প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর ব্যাটিং শুরু করলেও পরের ওভারেই অস্বস্তি অনুভব করেন লিটন। মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। সাদমানকে ছাড়িয়ে যাওয়া সুযোগ ছিল তার। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৪ রানে মাঠ ছাড়ার পর আর মাঠে নামতে পারেননি।

বাংলাদেশ লিটনের কনকাশন পরিবর্তন হিসাবে মেহেদী হাসান মিরাজকে ব্যাট করতে পাঠায়। তবে অনাকাঙ্খিতভাবে পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। মাত্র ৮ রান করে ফিরেছেন। এরমধ্যেই মাঝখানে ব্যাট হাতে কচ্ছপ গতিতে এগোচ্ছিলেন নাঈম হাসান। কিন্তু ইশান্তের বল তার স্টাম্প উড়িয়ে দিলে শেষ হয় বাংলাদেশের শেষ প্রতিরোধ।

আবু জায়েদ রাহি চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে শূন্য রানে আউট হতেই সমাপ্তি ঘটে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের। ৩০.৩ ওভারে দলীয় স্কোর দাঁড়ায় ১০৬ রানে।

ইশান্ত শর্মা ১২ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট। তিন উইকেট নিতে উমেশ যাদবকে খরচ করতে হয় ২৯ রান। দুই উইকেট নেন সামি। ৩০ ওভারের মধ্যে ভারতের মাত্র একজন স্পিনার হাত ঘুরিয়েছেন। রবীন্দ্র জাজেদা বল হাতে পেলেও সুযোগ পাননি রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts