রুম্পার জন্য স্ট্যামফোর্ড কাঁদছে

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রুম্পার জন্য স্ট্যামফোর্ড কাঁদছে।রুবাইয়া শারমিন রুম্পা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে ছুটির দিনেও স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছে।

রাজধানীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পাকে (২১) ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। রুম্পাকে ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবিতে শুক্রবার মানববন্ধন করেছেন তার সহাপাঠীরা।

রুম্পার বাবার নাম রকনুদ্দিন। তিনি পুলিশের একজন পরিদর্শক। সিলেটের হবিগঞ্জ সদরে তিনি কর্মরত আছেন।

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী থেকে উদ্ধার হওয়ার নিহত রুম্পার লাশ শুক্রবার সকাল ১০টায় ময়মনসিংহের সদর উপজেলার বিজয়নগর গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) রুম্পার ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এ বিষয়ে হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘ধর্ষণের পর রুম্পাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। যে ইনজুরিগুলো পেয়েছি, সেগুলো দেখে মনে হচ্ছে উঁচু কোনো জায়গা থেকে তিনি পড়ে মারা গেছেন।’

ডা. সোহেল মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা নিহতের ভিসেরা ও রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। এ ছাড়া আগে ওই তরুণী কারও সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন কি না, তাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন স্যাম্পল পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছি, ডিএনএও সংগ্রহ করা হয়েছে।’ এ সময় মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষাগুলোর প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।’

গত বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের পেছনে দুই বাড়ির মধ্যে থেকে ওই তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ক্রাইমসিন ক্রাইমসিন ইউনিট। সেখানে বিভিন্ন আলামতসহ ওই তরুণীর ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করেন তারা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে তার আশপাশে বেশকিছু ছেলে ও মেয়েদের হোস্টেল রয়েছে। রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। সেটি তদন্তাধীন।

এদিকে রুবাইয়া শারমিন রুম্পা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তার শিক্ষক ও সহপাঠীরা।  সকালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিচে তারা এ মানববন্ধন করেন।

এ সময় রুম্পার শিক্ষকরা বলেন, রুম্পা ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। নিয়মিত ছাত্রী হিসেবে তিনি পড়ালেখায় মনোযোগী ছিলেন। তার মধ্যে আত্মহত্যার কোনো প্রবণতা ছিল না। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

রুম্পার সহপাঠীরা অনেকেই বলছেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। তারা রুম্পা হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে শনিবারও কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

Print Friendly

Related Posts