বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, বিজিবি থেকে শুরু করে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান। অনুষ্ঠানে পাঁচ জন নারী ও তাদের পরিবারের হাতে বেগম রোকেয়া পদক-২০১৯ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানেই মেয়েরা কাজ করছে সব ক্ষেত্রে তারা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। পুরুষদের পাশাপাশি একটা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তারা এগিয়ে যাচ্ছে।’
নারীরা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে; বেগম রোকেয়ার সে স্বপ্ন আজ বাস্তবতা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়া স্বপ্ন দেখতেন যে নারীরা জজ-ব্যারিস্টার হবে, তারা বিভিন্ন পেশায় কাজ করবে। আমি বর্তমানে এতটুকু দাবি করতে পারি, বর্তমানে বাংলাদেশের মেয়েরা সেই জায়গাটা করে নিতে পেরেছে।’
সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘বেগম রোকেয়া হয়তো চাইতেন একজন নারী কোনো রাষ্ট্রের প্রধান হবেন। সমাজ ও পরিবারে পুরুষের সঙ্গে সমানভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবে, পা ফেলে চলবে। সমান অধিকার ভোগ করবে। সেটা এখন নিশ্চিত করতে পেরেছি এটা আমরা দাবি করতে পারি।’
১৯ শতকের দিকে পর্দার নামে নারীদের ঘরে বন্দী করে রাখা হতো জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন পড়াশুনার সুযোগ ছিল না। আর মুসলমান মেয়েদের জন্য আরও কঠিন অবস্থা ছিল। সেই সময় সেই অন্ধকার জগত থেকে নারীদের আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া। আজ আমরা যে অবস্থানে এসেছি এতে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে। তাই তার নামে পদক দিতে পেরে আমরা সত্যিই খুব আনন্দিত এবং নিজেকে ধন্য মনে করছি।’
এ সময় সরকার নারীর উন্নয়ন ও সুরক্ষায় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি চাই মেয়েরা এগিয়ে আসুক। তারাই উদ্যোক্তা হোক।’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষ সুবিধা পাবেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।
এর আগে রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনের জন্য পাঁচ জন নারী ও তাদের পরিবারের হাতে বেগম রোকেয়া পদক ২০১৯ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
রোকেয়া পদকপ্রাপ্তরা হলেন-বেগম সেলিনা খালেক নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে; অধ্যক্ষ শামসুন নাহার নারী শিক্ষায় ও ড. নুরুননাহার ফয়জননেসা (মরণোত্তর) নারী শিক্ষা, নারীর অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য; পাপড়ি বসু নারীর অধিকার ও বেগম আখতার জাহান নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য পদক পেলেন।
এর আগে গতকাল রোববার বেগম রোকেয়া পদক-২০১৯ দেওয়ার জন্য পাঁচজন বিশিষ্ট নারী ব্যক্তিত্বকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।