বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ভালো শুরু পেয়েও বড় স্কোর গড়তে পারল না সিলেট থান্ডার। নির্বিষ বোলিংয়ের বিপক্ষে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় এরপর শতরান ছাড়ানো উদ্বোধনী জুটি পেল খুলনা টাইগার্স। ওপেনিংয়ে নামা মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংসে তারা জিতল অনায়াসে।
শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিলেটকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা। মোসাদ্দেক হোসেনদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় মুশফিকুর রহিমরা জিতেছেন ১৩ বল হাতে রেখে। মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৬২ বলে ৮৭ রানে।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সপ্তম ম্যাচে এটি খুলনার পঞ্চম জয়। তাদের অর্জন ১০ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে সিলেটের এটি ষষ্ঠ হার। তাদের পয়েন্ট মাত্র ২।
জবাব দিতে নেমে সিলেটের বোলারদের কোনোরকম পাত্তা না দিয়ে ৭৪ বলে ১১৫ রান যোগ করেন শান্ত ও মিরাজ। চলতি বিপিএলে এটাই সর্বোচ্চ ও প্রথম শতরানের উদ্বোধনী জুটি।
এই জুটি ভাঙেন ইবাদত হোসেন। ৩১ বলে ৫ চারে ৪১ রান করে বিদায় নেন বাঁহাতি শান্ত। অন্যপ্রান্তে মিরাজ তুলে নেন সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে নিজের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি। মুখোমুখি হওয়া ৩১তম বলে। এ বছরের শুরুতে গেল বিপিএলে রাজশাহী কিংসের হয়ে ৫১ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন এই স্পিন অলরাউন্ডার।
খুলনার জয় যখন সময়ের ব্যাপার, তখন ফেরেন তিনে নামা রাইলে রুশো। ১১ বলে ১৫ রান করে শেরফান রাদারফোর্ডের শিকার হন তিনি। দলনেতা মুশফিককে নিয়ে বাকিটা সারেন মিরাজ।
অনবদ্য ৮৭ রানের ইনিংসে ৯ চার ও ৩ ছক্কা মারেন মিরাজ। মাঝে একবার জীবন পান ব্যক্তিগত ৭৬ রানে। নাঈম হাসানের বলে লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দেন বিপিএলের শুরুতে ‘বিশাল নো বল’ করে আলোচনায় আসা ক্রিসমার সান্টকি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেটকে দারুণ শুরু এনে দেন আন্দ্রে ফ্লেচার। রবি ফ্রাইলিঙ্কের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার থেকে ৩ চার ও ১ ছক্কায় তিনি আদায় করে নেন ২১ রান। কিন্তু দৃষ্টিকটুভাবে অন্য প্রান্তে রুবেল মিয়া খেলতে থাকেন টেস্ট মেজাজে।
৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে নবম ওভারের শেষ বলে। সেই ফ্রাইলিঙ্কই আক্রমণে ফিরে বিদায় করেন ফ্লেচারকে। ২৪ বলে ৩৭ রান করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটসম্যান।
শামুক গতিতে ব্যাটিং করা রুবেল প্রথম বাউন্ডারি মারেন মুখোমুখি হওয়া ৩২তম বলে। এরপর হাত খোলার কিছুটা প্রয়াস ছিল তার। জনসন চার্লসের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২৪ বলে ৪০ রান যোগ করেন তিনি।
স্কোরবোর্ডে ১ উইকেটে ১০০ রান তুলে ফেলা সিলেট এরপর দ্রুত হারায় ৩ উইকেট। চার্লস ১২ বলে ১৭ রান করে ফ্রাইলিঙ্কের দ্বিতীয় শিকার হন। ৪৪ বলে ৩৯ রান করা রুবেলকে বিদায় করেন শহিদুল ইসলাম। ওই ওভারেই মোহাম্মদ মিঠুনকে রানের খাতা খুলতে না দিয়ে সাজঘরে পাঠান তিনি।
পঞ্চম উইকেটে ৩৭ বলে ৫৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে সিলেটের সংগ্রহ দেড়শ পার করান রাদারফোর্ড ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক। কিন্তু তারা কেউই প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি। রাদারফোর্ড ২০ বলে ২৬ ও মোসাদ্দেক ১৮ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৫৭/৪ (ফ্লেচার ৩৭, রুবেল ৩৯, চার্লস ১৭, রাদারফোর্ড ২৬*, মিঠুন ০, মোসাদ্দেক ২৩*; আমির ০/১৭, ফ্রাইলিঙ্ক ২/৫৮, তানভির ০/২৩, শফিউল ০/৩০, শহিদুল ২/২৬)
খুলনা টাইগার্স: ১৭.৫ ওভারে ১৫৮/২ (শান্ত ৪১, মিরাজ ৮৭*, রুশো ১৫, মুশফিক ৩*; সান্টকি ০/৩২, নাঈম ০/৩১, মোসাদ্দেক ০/২৫, ইবাদত ১/২১, দেলোয়ার ০/১৮, নাজমুল অপু ০/১৮, রাদারফোর্ড ১/৯)
ফল: খুলনা টাইগার্স ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মেহেদী হাসান মিরাজ।